ফাইল চিত্র।
উষ্ণতার সঙ্গে দুর্দান্ত লড়াই চালিয়ে পারদকে চলতি সময়ের স্বাভাবিকের কোঠায় নামিয়ে এনে বড়দিনে কোনও রকমে মুখরক্ষা করেছে শীত। কিন্তু তার পরের দিনই অর্থাৎ মঙ্গলবার পারদ আবার স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস উপরে।
কেন?
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, সময়টা ডিসেম্বরের শেষ হলেও ঠান্ডার কাছে টি-টোয়েন্টির ধুমধাড়াক্কা আশা করা যাচ্ছে না। টেস্টের ঢিমে লয়েই ব্যাটিং করবে সে।
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানাচ্ছেন, এই সময়ের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী উত্তুরে হাওয়া বইছে ঠিকই। কিন্তু তার কোমরের জোর তেমন নেই। তাই তাপমাত্রা আপাতত খুব বেশি নামবে না। আগামী কয়েক দিন কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা ১৪-১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে।
হাওয়া অফিসের খবর, মঙ্গলবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.১ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। বীরভূম, বাঁকুড়া, আসানসোলের মতো রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অবশ্য রাতের তাপমাত্রা কলকাতার থেকে কিছুটা কমই রয়েছে।
এ বার মরসুমের গোড়া থেকেই পরের পর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্তের দাপটে মুখ থুবড়ে পড়ে শীত। তারই মধ্যে সোমবার, বড়দিনে কোনও মতে ১৪ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছয় শীত। চলতি মরসুমে এখনও পর্যন্ত সেটাকেই শীতলতম দিন বলা হলেও আবহবিদদের পর্যবেক্ষণে এই শীত নেহাতই পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা।
আবহবিজ্ঞানীরা জানান, গাঙ্গেয় বঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলে শীত বয়ে আনে উত্তুরে হাওয়া। উত্তর পশ্চিম ভারতে যত বেশি ঠান্ডা পড়বে, ততই কনকনে ভাব বাড়বে উত্তুরে হাওয়ায়। কিন্তু এ বার যে-সময়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানায় জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছিল, তখন উত্তুরে হাওয়ার পথ আগলে ছিল নিম্নচাপ আর ঘূর্ণাবর্ত। সেই বাধা যখন কাটল, তত ক্ষণে উত্তর-পশ্চিম ভারতে ঠান্ডা গিয়েছে কমেছে। ফলে জোর কমেছে উত্তুরে বাতাসের।
২০১৭ সালটা কি তা হলে শীতের কাঁপুনি ছাড়াই শেষ হবে?
আবহবিদদের একাংশ নজর রাখছেন আফগানিস্তানের উপরে। একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝার জেরে এ দিনই ওই দেশে তুষারপাত শুরু হয়েছে। এর পরে কাশ্মীর হয়ে সেটি এ দেশে ঢুকবে। ভূস্বর্গে তুষারপাত হলে উত্তর-পশ্চিম ভারতে আবার জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়বে। ‘‘প্রকৃতি যদি ফের খামখেয়ালি আচরণ না-করে, তা হলে বর্ষশেষে শীতের দাপট বাড়তে পারে,’’ আশ্বাস এক আবহবিজ্ঞানীর।