বন্‌ধের চোটে ‘বেপাত্তা’ বাঘ

বাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখতে দুই লপ্তে মোট আটটি ট্র্যাপ ক্যামেরাও বসিয়ে দেওয়া হয়। দু’বার সেই ক্যামেরায় বাঘের ছবি ওঠে। কথা ছিল, তার পরে অরণ্যে বাঘের খোঁজ ও সংরক্ষণে আরও ব্যবস্থা হবে।

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ

মালবাজার শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রায় চার মাসের বন্‌ধে ‘হারিয়ে গিয়েছে’ বাঘেরা। অন্তত, কালিম্পঙের নেওড়া ভ্যালি থেকে পাওয়া তথ্য তাই বলছে।

Advertisement

এ বছরই ১৯ জানুয়ারি লাভা আর আলগারার মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা আনমোল ছেত্রী নেওড়া ভ্যালির জঙ্গল লাগোয়া পথের ধারে বাঘ দেখতে পান। সে খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। তল্লাশি শুরু করে বন দফতর। গরুর আধখাওয়া মৃতদেহও মিলতে থাকে। বাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখতে দুই লপ্তে মোট আটটি ট্র্যাপ ক্যামেরাও বসিয়ে দেওয়া হয়। দু’বার সেই ক্যামেরায় বাঘের ছবি ওঠে। কথা ছিল, তার পরে অরণ্যে বাঘের খোঁজ ও সংরক্ষণে আরও ব্যবস্থা হবে।

কিন্তু জুন থেকে গুরুঙ্গের ডাকা বন্‌ধের চোটে সেই সব উদ্যোগেই জল পড়ে যায়। বন দফতরের আপার নেওড়ার ডোলে আর লোয়ার এলাকার সৌরিনি ক্যাম্প অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুড়ে যায় নেওড়া ভ্যালির বেশ কিছু প্রামাণ্য নথিও। জঙ্গলের ভিতরে টহলদারিও সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয়। একটি ক্যামেরাও চুরি হয়ে যায়। বাকি ট্র্যাপ ক্যামেরাগুলোর ব্যাটারি ফুরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু লাগাতার বন্‌ধের জন্যে ব্যাটারিও বদল করা যায়নি। বাঘের গতিবিধির কোনও খবরও মেলেনি।

Advertisement

বাঘেরা তাই ‘বেপাত্তা’। তারা এই বনে রয়েছে, না অন্য কোথাও চলে গিয়েছে, সে সংবাদও বন দফতরের কাছে নেই। ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের হামলায় আমাদের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে।’’

বন্‌ধ উঠে যাওয়ার পরে আবার বাঘের খোঁজে ক্যামেরা চালুর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু ক্ষতি অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। নিশা বলেন, ‘‘ক্যামেরার ব্যাটারি না থাকায় গত কিছু মাসের তথ্যও আমাদের হাতে নেই।’’

বন্‌ধের আগে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। বাঘের সন্ধান মেলার তথ্য হাতে পেয়ে প্রোজেক্ট টাইগারের তরফ থেকে খোঁজও নেওয়া হচ্ছিল। সেই সময় বন্‌ধের কবলে পড়ে সব ভণ্ডুল হয়ে যায়। নতুন করে পুরো উদ্যোগ শুরু করতে হবে। পরিবেশপ্রেমীরা আতঙ্কিত অরণ্যের অবস্থা নিয়েও। তাঁরা বলছেন, এই ক’মাসে দেখভালই ছিল না। তখন বনে কী হয়েছে, কেউ জানেন না। ভয়ে বা লোভে কোনও বন্যপ্রাণীকে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা-ও জানা যায়নি। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু জানান, এক হাজার ফুট থেকে দশ হাজার ফুট পর্যন্ত বিস্তৃত নেওড়া ভ্যালির মতো জাতীয় উদ্যান বিরল। বাঘ ছাড়া আরও অনেক প্রাণীই এখানে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন