অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আমডাঙায় ঢুকছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক মিছিল শুরু করতে চলেছেন রাজনৈতিক হিংসায় থমথমে হয়ে থাকা এলাকায়। মিছিল শেষে বহিছগাছিতে সভাও করবেন তিনি। র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স সঙ্গে নিয়ে আমডাঙায় হাজির থাকছেন খোদ পুলিশ সুপার সি সুধাকর।
সপ্তাহ দেড়েক আগে বোমা-গুলিতে প্রবল ভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে এলাকার দখল হাতে রাখাকে কেন্দ্র করেই গোলমালের সূত্রপাত। ভয়াবহ হিংসায় অন্তত ৩ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন ১০ জন। সেই থেকেই থমথমে গোটা এলাকা। পুলিশি তৎপরতা বেড়েছে আমডাঙায়। রোজ অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে নানা এলাকা থেকে। চলছে ধরপাকড়ও।
এ সবের মধ্যেই ৩ সেপ্টেম্বর আমডাঙায় সভা করার কথা ছিল বামেদের। মহম্মদ সেলিম, তন্ময় ভট্টাচার্যদের নেতৃত্বে আমডাঙা থানার সামনে জনসভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ জাতীয় সড়কেই আটকে দেয় বাম নেতাদের। সন্তোষপুর মোড়ে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। সে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন সিপিএম নেতৃত্ব। আগে থেকে পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও সিপিএম নেতাদের কেন ঢুকতেই দেওয়া হল না আমডাঙায়, প্রশ্ন তোলে সিপিএম। মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘কালীঘাটের নির্দেশে পুলিশ আমাদের পথ আটকাল।’’
আরও পড়ুন: খাঁটি তৃণমূল তো? ‘আতসকাচে’ যাচাইয়ের পরে দেওয়া হচ্ছে ডিজিটাল শিবিরের প্রবেশপত্র
আজকের অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের ছবিটা কিন্তু অন্য রকম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে ৬ সেপ্টেম্বর আমডাঙায় মিছিল এবং সভা হবে, সে কথা তৃণমূল নেতৃত্ব আগেই জানিয়েছিল। জেলা তৃণমূলের তরফে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুলিশ-প্রশাসনও সেজেগুজে প্রস্তুত।
তারাবেড়িয়া, বোদাই এবং মরিচা— এই তিনটি অঞ্চলই মূলত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বোমা-গুলি-খুনোখুনিতে। ওই এলাকা দিয়েই এ দিন মিছিল নিয়ে যাওয়ার কথা অভিষেকের। সঙ্গে থাকতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য সভাপতি তথা দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ সুব্রত বক্সি। জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও থাকছেন। এ ছাড়া ব্যারাকপুরের সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী, আমডাঙার বিধায়র রফিকুর রহমান, নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক এবং ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহেরও থাকার কথা এ দিনের কর্মসূচিতে। জেলা নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে ২০-২৫ মিনিট পদযাত্রা করবেন অভিষেক। তার পরে বহিছগাছিতে জনসভা করবেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে তেমনই। এই বহিছগাছিই সবচেয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজনৈতিক হিংসায়।
আরও পড়ুন: টার্গেট ২০১৯: আঙুলে-আঙুলে ধুন্ধুমার লড়াই পদ্ম আর ঘাসফুলে
তৃণমূলের এই কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক পুলিশি বন্দোবস্ত করেছে জেলা প্রশাসন। পুলিশ সুপার সি সুধাকর রাও, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, তিন জন ডিএসপি এবং অন্তত ৬ জন ইনস্পেক্টর আমডাঙায় থাকছেন। পুলিশ, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জনের বাহিনী মোতায়েন হয়েছে। বিমানবন্দরের কাছে থেকে আমডাঙা পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’ধারেও মোতায়েন করা হয়েছে বাহিনী।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া - পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)