রুটিন বানিয়ে সময় বাঁধো

কলেজে উঠে সময়-স্রোতে হাবুডুবু? টাইম ম্যানেজমেন্টের টিপস দিচ্ছে আনন্দবাজার।সময় বড় বালাই। কলেজে উঠে সেটা সবচেয়ে বেশি টের পায় ছেলেমেয়েরা। স্কুলের মতো নিয়মের কড়াকড়ি থাকে না কলেজে। পড়াশোনা নিয়ে বাড়ির লোকের মাথাব্যাথাটাও উধাও। এদিকে পকেটমানি বেড়েছে। নতুন নতুন বন্ধু। সিনেমা, রেস্তোরাঁ—মাথা ঘুরে যাওয়ার সমস্ত উপাদান মজুত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫৬
Share:

সময় বড় বালাই। কলেজে উঠে সেটা সবচেয়ে বেশি টের পায় ছেলেমেয়েরা। স্কুলের মতো নিয়মের কড়াকড়ি থাকে না কলেজে। পড়াশোনা নিয়ে বাড়ির লোকের মাথাব্যাথাটাও উধাও। এদিকে পকেটমানি বেড়েছে। নতুন নতুন বন্ধু। সিনেমা, রেস্তোরাঁ—মাথা ঘুরে যাওয়ার সমস্ত উপাদান মজুত। কলেজ জীবনের মজা উপভোগ করতে গিয়ে কেরিয়ারের বারোটা বাজে অনেকের। অনেকে আবার গম্ভীর মুখে পড়াশোনা করতে-করতে কখন যে কলেজ জীবন শেষ হয়ে যায় টের পায় না। এই দু’টোর মাঝে ব্যালেন্স করে টাইম ম্যানেজমেন্টটাই কলেজ জীবনের আর্ট।

Advertisement

সহজ ক্যালেন্ডার

কলেজের রুটিন হাতে পাওয়ার পর নিজের একটা রুটিন বানিয়ে ফেলো। কাগজে লিখতে পারো, মোবাইলেও। সেখানে ক্লাসের শেষে আড্ডার জন্য যেমন সময় থাকবে, তেমনই টিউশনের জন্যও সময় থাকবে। পারলে কখন ঘুমাবে সেটাও। আরাম, বিনোদন—এক কথায় নিশ্বাস ফেলার সময়ও যেন থাকে। রুটিনটা প্রথমে কিম্ভূত মনে হতে পারে। বুঝবে ঠিক পথে এগোচ্ছ।

Advertisement

রোজ পড়া

পরীক্ষার আগে নাকেমুখে গুঁজে পড়ে উতরে দেবে ভেবে গোড়ার দিকে সময় নষ্ট করে অনেকে। এটা ঠিক নয়। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়তে বসাটা জরুরি। বিশেষ করে যেদিন ক্লাসে যেটা পড়ানো হবে, সেটা আগে থেকেই পড়ে যাও। যেখানে ঠেকবে সেটা ক্লাসে জেনে নাও। বাড়ি এসে ক্লাসনোট উল্টেপাল্টে সেদিনই বিষয়টা আয়ত্তে আনো। সপ্তাহ শেষে সাত দিনের ক্লাসনোট একঝলকে দেখে নিলে পুরোটা ঝালাই হয়ে যাবে।

গভীরে যাও

যে কোনও বিষয় মনোযোগ সহকারে পড়ার একটা ছক আছে। এক ঘণ্টার ছক। প্রথম পাঁচ মিনিট কী পড়বে সেটা ঠিক করে নাও। পরের ৪০ মিনিট বিষয়টা পড়ো। হাতে লেখা নোটে গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলো হাইলাইট করে নাও। এবার ১০ মিনিটের বিশ্রাম। শেষে পাঁচ মিনিট পুরোটা আবার একবার পড়া।

ছক আগে

ডিসার্টেশন পেপার জমা দিতে হবে? আগে থেকে ভেবে রাখো কতটা সময় লাগবে বিষয় বাছতে, কতটা রিসার্চ করতে, আর কতটা লিখতে। সেই মতো ব্যাক ক্যালকুলেশন করে ক্যালেন্ডারে দাগ দাও। এই ভাবে তৈরি না হলে শেষবেলা তাড়া লেগে যাবে।

নমনীয় হও

তুমি ভাবছো দু সপ্তাহের মধ্যে অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে ফেলবে। কিন্তু যে রাতটা জেগে কাজ শেষ করে ফেলবে ভেবেছিলে তার আগের দিন হয়তো জ্বর বাধল। আবার হঠাৎ জানতে পারলে দু’দিন পরে বন্ধুর জন্মদিনের পার্টি। আশাতীত এই সমস্ত ঘটনার জন্য সবসময় তৈরি থাকতে হবে। নিজের ক্যালেন্ডারে কিছু জায়গা ফাঁকা রাখো এদিক-ওদিেকর জন্য।

স্মার্টফোন সামলে

পড়তে বসেছো। পাশে স্মার্টফোন। টিক টিক করে অ্যালার্ট আসছে। কখনও হোয়াটস্্অ্যাপ-এ জোকস্, কখনও ফেসবুকে তোমার ছবিতে লাইক। তুমিও প্রতি-উত্তরে ব্যস্ত। পড়বে কখন? স্মার্টফোন ব্যবহারে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণটা খুব জরুরি। অ্যালার্ট বন্ধ করে রাখো। পড়া শেষে অবসরের সময় ফেসবুক করো।

স্টাডি-বাডি

কলেজের কয়েকজন গ্রুপ বানিয়ে পড়াশোনা করতে পারো। নোট শেয়ার করা যায়। কোনও কারণে কলেজে যেতে না পারলে ক্লাসনোট পেয়ে যাবে। তুমি যেখানে আটকে যাচ্ছো, সেখানে সমাধােনর পথ দেখাতে পারে অন্যে।

সময়ে ঘুম

পার্টি-হইহুল্লোড়ে বেশি মেতে গেলে মুশকিল। দিনের ক্লান্তি দূর করতে ঠিক সময়ে ঘুম জরুরি।

টাইম ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ

নোট তৈরি করতে, রুটিন বানাতে বা অ্যাসাইনমেন্টে ডেডলাইন মনে করাতে টাইম ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ চলে এসেছে বাজারে। যেমন, স্মার্ট অ্যাপ ‘টাইমফুল’ (Timeful) তোমার অভ্যাস, বদভ্যাস বা রুটিনের এমন নিখুঁত খবর রাখে যে নতুন কোনও কাজ ঢোকাতে গেলে সেটা করার উপযুক্ত সময়টা জানিয়ে দিতে পারে। আর্টিকেল থেকে শুরু করে ফিল্ম ক্লিপ, ওয়েবপেজ রেখে দেওয়া যায় ‘এভারনোট’-এ (Evernote)। ‘ফোকাস বুস্টার’ একটা অনলাইন অ্যাপ, যেটা মূলত কোথায় কত সময় খরচ করছো তার হিসাব রাখে।

আবার এমন কিছু অ্যাপ আছে, যেগুলো দিয়ে সরাসরি টাইম ম্যানেজমেন্ট করা না গেলেও সময় খরচ কমানো যায়। যেমন ‘সুপার নোটস’ অ্যাপ থাকলে ক্লাসে লেকচার রেকর্ড করে রাখতে পারো সহজে। ‘প্রেজি’ অ্যাপস দিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বানিয়ে ফেলতে পারো যাতায়াতের পথে।

প্রযুক্তির দুনিয়ায় এই ভাবেই হাতের মুঠোয় বাঁধা পড়ছে সময়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন