পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে গা গরম করা শুরু করে দিল তৃণমূল ও বিজেপি। শাসক দলের কাণ্ডারী স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিজেপিকে বাতাস দিতে দিল্লির নেতারা ছুটে আসছেন কলকাতায়।
আগামী ৯ মার্চ নজরুল মঞ্চে দলের পঞ্চায়েত সম্মেলন ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে গ্রাম প্রধান, সমিতি সভাপতি, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও সভাধিপতিদের ডাকা হচ্ছে। থাকবেন ব্লকের মহিলা নেত্রীরাও। সেই সম্মেলনেই প্রায় চার হাজার জেতা প্রার্থীর সামনে এ বারের লড়াইয়ের দিশা নির্দেশ করবেন দলনেত্রী।
দলীয় নেতাদের একাংশ মনে করছেন, এখন সবগুলি জেলা পরিষদই তৃণমূলের দখলে। ফলে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই আসন ধরে রাখাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তার উপরে যুক্ত হয়েছে আরও তিন চাপ—পঞ্চাশ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ, টিকিটের তীব্র চাহিদা এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। গ্রাম বাংলায় বিরোধীরা মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারলেও দলের নীচুতলার নিজেদের লড়াইয়ে খুনোখুনির আশঙ্কাও করছেন দলের কেউ কেউ। সেই কারণেই দলনেত্রী নিজেই ভোট লড়ার কৌশল বাতলে দেবেন বলে ঠিক করেছেন।
একইভাবে আজ, শনিবার দলের সাংগঠনিক কর্মশালায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে রাজ্য বিজেপিও। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, প্রায় বিরোধীশূন্য ভোট ময়দানে জোড়াফুলের সঙ্গে পদ্মফুলেরই যা লড়াই হওয়ার হবে। বাম ও কংগ্রেস কার্যত অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের ভূমিকায় থাকবে। তাতেই শান দিতে দিল্লি থেকে উড়ে আসছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও শিবপ্রকাশরা। থাকবেন রাজ্য নেতারাও। তৃণমূল মোকাবিলায় বিজেপির ভূমিকা কী হবে, তা এ দিন স্পষ্ট করবেন দিল্লির নেতারা।
এ বারই প্রথম অর্ধেক আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। যা দলের নীচুতলার ক্ষমতার ভারসাম্য বদলে দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। দল বড় হলেও তিনটি স্তরে উপযুক্ত মহিলা প্রার্থী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে তৃণমূলের কাছেও। তৃণমূলই যেখানে মহিলা প্রার্থী পেতে নাজেহাল হচ্ছে, সেখানে বিরোধীরা বহু আসনে প্রার্থীই দিতে পারবেন না বলে শাসক দলের একাংশ দাবি করছেন। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংরক্ষণের কারণে এবার নতুন ভাবে কাজ করতে হচ্ছে। আর প্রত্যাশার চাপ প্রত্যেক নির্বাচনেই থাকে। এ সব নিয়েই দলনেত্রী পথনির্দেশ করবেন।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের চ্যালেঞ্জ,‘‘ অবাধ ভোট হোক বিজেপি বুঝিয়ে দেবে তৃণমূলের দিন শেষ।’’