হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
হুমায়ুন কবীরকে শেষ বারের মতো সতর্ক করল তৃণমূল। শুক্রবার বিধানসভায় নিজের ঘরে ডেকে তাঁকে শেষ বারের মতো সতর্ক করেছেন বলে জানিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনকে যে নোটিসটি ধরানো হয়েছে, তাতেও ‘লাস্ট এবং ফাইনাল ওয়ার্নিং’ বলা রয়েছে। শোভনদেবও পরে বলেছেন, ‘‘এটা লাস্ট ওয়ার্নিং।’’
গত বছর কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে প্রথমে শো কজ় করা হবে। সংশ্লিষ্ট নেতাকে জবাব দিতে হবে। পর পর তিন বার একই ঘটনা ঘটলে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হবে তৃণমূল থেকে। মমতার সেই বার্তার পর এই নিয়ে তৃতীয় বার হুমায়ুনকে শো কজ় করল তৃণমূল। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, এর পর একই ঘটনা ঘটলে কি হুমায়ুনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে?
তৃতীয় বার নোটিস পাওয়ার পর শুক্রবার হুমায়ুন বলেছেন, ‘‘ফাইনাল ওয়ার্নিং না সেমি ফাইনাল, ও সব আমি বুঝি না। এ ব্যাপারে আমি প্রকাশ্যে কিছু বলব না।’’ বিধায়কের সংযোজন, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য দল করি। উনি যদি বলেন আমি দলের জন্য ক্ষতিকারক বা আমার জন্য দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে, উনি যদি আমাকে দল করতে বারণ করেন, আমি করব না। বাইরে যারা দলের খারাপ চায়, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় যদি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আমায় নোটিস দেয়, আমি জবাব দেব। এর আগেও দিয়েছি। আবার দেব।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, এর আগে হুমায়ুন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে সশরীরে হাজিরা দিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হুমায়ুন আচরণ বদলাননি। তাই এ বার কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে যে নোটিসটি দেওয়া হয়েছে, তাতে শোভনদেবের পাশাপাশি সই রয়েছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের। হুমায়ুন সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এবং প্রকাশ্যে এমন কিছু মন্তব্য করেছেন, তাতে দলের অস্বস্তি বেড়েছে। দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই কড়া পদক্ষেপ করেছে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। এ বারের মতো না শুনলে হুমায়ুনের বিধায়ক পদ সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ করা হতে পারে।
শোভনদেব বলেন, ‘‘এর আগেও সতর্ক করা হয়েছিল। তার পরেও উনি এমন কিছু কথা বলছেন, তাতে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ হচ্ছে। আমি মৌখিক ভাবেও বলেছিলাম। বার বার বলা সত্ত্বেও হচ্ছে না, তাই ওয়ার্নিং দিয়ে দেওয়া হল। এর পর দল সিদ্ধান্ত নেবে।’’
পাল্টা হুমায়ুনও বলেন, ‘‘আমি কেন মুখ খুলি, তার যথাযথ উত্তর দেব। আমি আমার ক্ষোভের কারণ জানিয়েছি শোভনদেববাবুকে। আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নানা বিষয়ে খবর দিই। অনুনয়-বিনয় করি। তাতে যখন কাজ হয় না, তখন মুখ খুলি। বাকি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ওঁরা নেবেন। আমি খারাপ কাজ করি না। কেউ করলেও তা-ও বরদাস্ত করি না।’’