অন্তর্ঘাতের তদন্ত শুরু তৃণমূলে, ভাবনায় রদবদল

বিপুল জয়ের মধ্যেও অন্তর্ঘাতের কাঁটার খচখচানি রয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে নবান্নে ফিরে দলে অন্তর্দ্বন্দ্বের সমস্যা কাটাতে পদক্ষেপ শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই কিছু সাংগঠনিক রদবদল কার্যকর হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০৪:১৪
Share:

বিপুল জয়ের মধ্যেও অন্তর্ঘাতের কাঁটার খচখচানি রয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে নবান্নে ফিরে দলে অন্তর্দ্বন্দ্বের সমস্যা কাটাতে পদক্ষেপ শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই কিছু সাংগঠনিক রদবদল কার্যকর হয়েছে। হারা আসনের ময়না তদন্ত করে আরও কিছু রদবদলের পথে এগোচ্ছে শাসক দল।

Advertisement

দু’বছর বাদেই পঞ্চায়েত ভোট। বিধানসভা ভোটে জেতার পরেই অন্তর্কলহের কাঁটা সামলাতে তৎপরছেন মমতা। সাফল্যের বাজারেও বিধানসভা ভোটে যে সব জেলায় দলের ফল আশানুরূপ হয়নি, সেখানে দলীয় নেতৃত্বের কাছে থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার জন্যে মমতা নিজেই ৮ সদস্যের কমিটি গড়ে দিয়েছেন। দক্ষিণ কলকাতায় দলীয় দফতরে সেই কমিটির প্রথম বৈঠক বসেছিল বুধবার। বৈঠকে ভোটে অন্তর্ঘাত নিয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বৈঠকে ছিলেন না।

দলের পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই তাঁদের হারের কারণ বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট দিয়েছেন। দলীয় প্রার্থীদের হারিয়ে দিতে দলেরই একাংশের কী ভূমিকা ছিল, সবিস্তারে তা খতিয়ে দেখতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মমতা নির্দেশ দিয়েছেন, নিজেরা জিতব কিন্তু অন্যকে জিততে সাহায্য করব না— এই মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না! দলনেত্রীর সেই নির্দেশ মাথায় রেখেই কাজ এগোচ্ছে অন্তর্ঘাত নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি। জেলাগুলির কাছ থেকে আসনভিত্তিক আরও বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

বিভিন্ন প্রার্থীর কাছ থেকে পরাজয় নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত যে অভিযোগ পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে মমতা ইতিমধ্যেই নদিয়ার জেলা সভাধিপতি বাণীকুমার রায়কে সরিয়ে দিয়েছেন। ভেঙে দেওয়া হয়েছে মালদহে দলের কোর কমিটিও। আরও কিছু জেলায় সাংগঠনিক নেতৃত্বে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত দলীয় স্তরে এক রকম চূড়ান্ত। আগামী ১৮ জুন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সাধারণ পরিষদের বর্ধিত সভা করবেন মমতা। সব কিছু ঠিকঠাক চললে সেই সভাতেই আরও কিছু রদবদলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেন মমতা। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘সংগঠনকে আরও গুছিয়ে নেওয়াই এখন লক্ষ্য।’’

তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, নেতাজি ইন্ডোরের সভার আগে দ্রুত রিপোর্ট পাঠানোর জন্য বিভিন্ন জেলার নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। নদিয়ার রানাঘাট মহকুমার ফল নিয়ে মমতা যেমন অত্যন্ত অসন্তুষ্ট। উত্তরবঙ্গে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার বা কোচবিহার জেলায় তৃণমূল যেখানে ভাল ফল করেছে, সেখানে মালদহে তাদের একটি আসনও জোটেনি। ওই জেলায় দলীয় নেতৃত্বের কোন্দল এ বার কড়া হাতে দমন করার পরিকল্পনা হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যাদবপুর আসন বা উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি নিয়েও তৃণমূলের মধ্যে সন্দেহের বাতাবরণ আছে। দলের বড় অংশের ধারণা, দলেরই একাংশ ভোটে
বিরূপ ভূমিকা না নিলে মণীশ গুপ্ত বা মদন মিত্র হারতেন না। এই সন্দেহ থেকে সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর জন্যই আরও তথ্য তলব করা হয়েছে। ইন্ডোরের সভার জন্য জেলা নেতৃত্বকে প্রস্তুতি নিতে বলার বিষয়েও এ দিনের বৈঠকে কথা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন