TMC

কাকদ্বীপে ক্ষোভের নিশানা তৃণমূল 

ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও দিব্যেন্দু সরকার।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৩:২৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দিন দু’য়েক আগে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এলাকায় মিছিল করেছিল তৃণমূল। শুক্রবার ব্লক অফিসে আমপানের ক্ষতিপূরণের তালিকা বেরোতে দেখা গেল, পঞ্চায়েতের ১৭ জন তৃণমূল সদস্যের প্রায় প্রত্যেকে বা তাঁদের আত্মীয়েরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতা বা তাঁদের আত্মীয়েরাও টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

এই নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে কাকদ্বীপ মহকুমার বিবেকানন্দ পঞ্চায়েত এলাকায়। কোনও কোনও পঞ্চায়েত সদস্য ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। কারও কারও বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। এক পঞ্চায়েত সদস্য ইতিমধ্যে পদত্যাগও করেছেন। ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও দিব্যেন্দু সরকার।

কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে রয়েছে ১৩টি পঞ্চায়েত। প্রতাপাদিত্য, রামকৃষ্ণ, নারায়ণপুর, ঋষিবঙ্কিম, নেতাজি, বাপুজি, সূর্যনগর, মধুসূদনপুর, রবীন্দ্র পঞ্চায়েত-সহ প্রায় সমস্ত এলাকা থেকেই পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি এবং শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠছে। বিবেকানন্দ পঞ্চায়েত এলাকার বহু মানুষের অভিযোগ, আমপানে তাঁদের বাড়িঘর ভাঙলেও এখনও টাকা পাননি। ইতিমধ্যে কয়েকজন নেতা, পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরও চলে।

Advertisement

এর জেরে রবিবার দুপুরে শাসক দলের এক নেতা বাইক বাহিনী নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে হরিপুর গ্রামের মহিলা-পুরুষ একজোট হয়ে রবিবার হারউড পয়েন্ট কোস্টালের ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের বাসন্তী ময়দান মোড়ে রাস্তা অবরোধ করেন। এলাকার বাসিন্দা, জেলা বিজেপির সভাপতি দীপঙ্কর জানার অভিযোগ, ‘‘শাসক দলের সব স্তরের লোকজন এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা আমপানে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন। অথচ ক্ষতিগ্রস্তেরা বঞ্চিত হয়েছেন। আমাদের সমর্থকেরা প্রতিবাদ করায় তৃণমূল বাহিনী হামলা চালিয়েছে।’’

বিবেকানন্দ পঞ্চায়েতের অক্ষয়নগর কালীনগর গ্রামের শাসকদলের মহিলা সদস্য মিঠু দাস শনিবার বিডিও অফিসে ইস্তফাপত্র জমা দেন। তাঁর স্বামী দীনবন্ধু ফোনে বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে অঞ্চল সভাপতির কথা হয়েছে। বিষয়টি মিটে যাবে।’’ কিন্তু ইস্তফা কেন দিলেন, সে প্রশ্ন শুনেই ফোন কেটে দেন দীনবন্ধু। বিবেকানন্দ পঞ্চায়েতের প্রধান দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের কোনও সদস্য পদত্যাগ করেছেন বলে আমার জানা নেই। এক সঙ্গে থাকতে গেলে মাঝে মধ্যে বিবাদ হতেই পারে। আবার মিটেও যায়।’’ দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে দেবাশিসের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা নিয়ম না মেনে টাকা নিয়েছেন, প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। অসৎ লোকের দলে ঠাঁই নেই।’’ কাকদ্বীপের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার দাবি, ‘‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা বাংলাদেশি। রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড কিছুই নেই। সকলেই ক্ষতিপূরণের টাকা পর্যায়ক্রমে পাবেন।’’ দুর্নীতি, স্বজনপোষণ হয়ে থাকলে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করা হবে বলে তাঁর আশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন