মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি বিক্রি সম্পর্কে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বক্তব্যের আইনি মোকাবিলা করবে তৃণমূল।
ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার মালিকেরা আমানতকারীদের প্রতারণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি কোটি কোটি টাকায় কিনেছেন বলে শাহ মঙ্গলবার কাঁথির সমাবেশে অভিযোগ তোলেন। তাঁর আরও বক্তব্য, বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে প্রতারিতদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
তাঁর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিন রাজ্যের মন্ত্রী তথা মহিলা তৃণমূলের সভাপতি, আইনজীবী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য শাহকে চিঠি দিয়ে বলেন, হয় বক্তব্য প্রত্যাহার করুন, নতুবা জনসমক্ষে ক্ষমা চান। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
মমতার আঁকা ছবি চড়া দামে বিক্রি হয়েছে এবং সেই টাকা এসেছে বিভিন্ন ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে— এমন অভিযোগ দীর্ঘ দিন ধরে তোলা হচ্ছে। এ নিয়ে সিবিআই তদন্ত, গ্রেফতার, মামলা ইত্যাদিও চলছে।
শাহ এ দিন প্রশ্ন তোলেন বিভিন্ন নামি শিল্পীর ছবি হাজার কিংবা লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবির দাম কোটি কোটি টাকা হয় কেন? তৃণমূলের মন্ত্রী চন্দ্রিমাদেবী শাহের ওই বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন এবং মানহানিকর’ বলে দাবি করেছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘কোনও প্রমাণ ছাড়াই এই সব কথা বলা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে তৃণমূলনেত্রী অনেক দিন আগেই আয়কর দফতর, নির্বাচন কমিশন সকলের কাছে ছবি বিক্রির হিসাব দাখিল করেছেন।
তৃণমূল সূত্রে আগেই বার বার বলা হয়েছে মমতার ছবির প্রদর্শনী হয়েছে বার তিনেক। তা থেকে টাকা এসেছে আড়াই কোটির মতো। যার একটি বড় অংশ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে, আর একটি অংশ রাজ্যপালের ত্রাণ তহবিলে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয় তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রের তহবিলে। সেখান থেকে দলের নির্বাচনী খরচ সামলানো হয়েছে বলেও দাবি।
মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে শাহ যে মন্তব্য করেছেন, তাকেও ‘অর্থহীন’ বলে মনে করে রাজ্যের শাসক দল। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘ছবি সৃজনশীল শিল্পকর্ম। ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী তার দাম নির্ধারিত হয়। কোন ছবি কে কত টাকা দিয়ে কিনবেন, তার কোনও ধরা বাঁধা বিধি নেই। তবে যে ক্রেতা যত টাকা দিয়েই মমতার আঁকা ছবি কিনে থাকুন, দাম নেওয়া হয়েছে চেকে। সুতরাং এ নিয়ে অমিত শাহ অহেতুক যে ভাবে বাজার গরম করতে চাইছেন, তা ধোপে টিকবে না।’’