Jyotipriya Mallick

‘বালুদা’ই উপদেষ্টা পুজোর, গুণগান করলেন কাকলিও

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত হাবড়ার বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্তমানে রয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

হাবড়া শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:০০
Share:

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

তিনি জেলে। তবু হাবড়ার একটি জগদ্ধাত্রী পুজোর তিনিই ‘মুখ্য উপদেষ্টা’। এবং একই সঙ্গে দলের যে সাংসদের সঙ্গে তাঁর মতানৈক্য ছিল বরাবরের চর্চার বিষয়, সেই সাংসদের মুখেও তাঁর গুণগান।

Advertisement

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত হাবড়ার বিধায়ক তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বর্তমানে রয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। তবু তাঁকেই হাবড়ার ১০, ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ড অধিবাসীবৃন্দ পরিচালিত জগদ্ধাত্রী পুজোয় ‘মুখ্য উপদেষ্টা’ করে আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়েছে।

পুজোর উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, তাঁর পাশে তাঁরা আছেন— এই বার্তা দেওয়ার জন্যই ওই আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়েছে। নামে তিনটি ওয়ার্ডের অধিবাসীবৃন্দের পুজো হলেও এর সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতানেত্রীরা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। পুজো কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হাবড়ার পুরপ্রধান নারায়ণচন্দ্র সাহা এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গীতা সেনগুপ্ত। পুজো কমিটির সভাপতি উপ-পুরপ্রধান সীতাংশু দাস। এঁদের প্রায় সকলেরই দাবি, পুজোয় পুরোদস্তর যুক্ত থাকা ‘বালুদা’র অনুপস্থিতি তাঁদের মানসিক যন্ত্রণা দিচ্ছে।

Advertisement

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অবশ্য বলছেন, এর থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের মুখে জ্যোতিপ্রিয়র গুণগান। রবিবার হিজলপুকুর বটতলায় সংলগ্ন চালকল এলাকায় ওই পুজোর উদ্বোধন করে কাকলি বলেন, ‘‘এই পুজোয় কয়েক বছর ধরে আসছি। আমাকে আহ্বান করতেন এখানকার বিধায়ক। আশা করব, সামনের বছর পুজো শুরু হওয়ার আগেই তিনি ফিরে আসবেন।’’ হাবড়ায় শান্তি ফেরানোর জন্য জ্যোতিপ্রিয়ের ভূমিকার কথাও তোলেন সাংসদ।

যাঁর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়ের ‘মতানৈক্য’ নিয়ে গুঞ্জন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের, সেই কাকলির মুখে জ্যোতিপ্রিয়ের প্রশংসা শুনে অনেক তৃণমূল কর্মীই অবাক হয়েছেন। হাবড়া এলাকাটি বারাসত লোকসভা কেন্দ্রেই পড়ে। দলেরই একাংশ মনে করছে, সামনে লোকসভা ভোট। তার আগে হাবড়ায় জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করে দিলেন সাংসদ। সাম্প্রতিক সময়ে তিন বার তিনি হাবড়ায় এলেন। এক তৃণমূল নেতার বলেছেন, ‘‘বালুদার অনুপস্থিতিতে সাংগঠনিক দায়িত্ব কাকলিদি নিজের কাঁধে নিতে চাইছেন। বালুদার অনুগামীদেরও পাশে টানার চেষ্টা করছেন। প্রকারান্তরে সেই বার্তাই দিয়ে গেলেন।’’ এ নিয়ে কাকলি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তবে, বিরোধীরা বিঁধতে ছাড়ছে না। হাবড়ার সিপিএম নেতা আশুতোষ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয়ের সাজানো বাগান দখল করতে সাংসদ ঘনঘন আসছেন।’’ বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘কাকলিদি হাবড়ায় জায়গা পেতেন না। এখন বিধায়কের অনুপস্থিতিতে ঘনঘন হাবড়ায় এসে নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন