Rajiv Gandhi

রাজীব স্মৃতিস্মারক ভাঙা নিয়ে ধুন্ধুমার বাধল হাওড়ায়

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, শহিদ বেদি ভাঙার প্রতিবাদ করলে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্র, তরোয়াল, চপার নিয়ে এলাকায় তাণ্ডব চালায় ওই প্রোমোটারের অনুগত বাইক বাহিনী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০৫:১৯
Share:

এখানেই ছিল বেদিটি। নিজস্ব চিত্র।

কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গড়ে বিপুল সাফল্য পেয়েছেন তিনি। তবু রাজীব গাঁধীর প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধা আজও কিছুমাত্র কমেনি। এখনও তাঁর ঘরে রাজীব গাঁধীর ছবি দেখা যায়। কিন্তু সেই মমতার দলের এক ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধেই রাজীবের স্মারক বেদি ভাঙার অভিযোগ উঠল হাওড়ায়। অবশ্য দল হিসেবে তৃণমূল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ মেলেনি। বরং বেদি ভাঙার প্রতিবাদে কংগ্রেসের সঙ্গে পথে নেমে তৃণমূল কর্মীরাও আক্রান্ত হন। স্থানীয় সূত্রে খবর, বেদি ভাঙার পিছনে রয়েছেন বাকসাড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রোমোটার দাদা অভিজিৎ সেখানে একটি বহুতল তৈরি করছেন। তাঁদের লরির যাতায়াত সুগম করতেই ভাঙা হয়েছে বেদিটি। ব্লক সভাপতি নিজেও তা স্বীকার করেছেন।

Advertisement

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, শহিদ বেদি ভাঙার প্রতিবাদ করলে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্র, তরোয়াল, চপার নিয়ে এলাকায় তাণ্ডব চালায় ওই প্রোমোটারের অনুগত বাইক বাহিনী। পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনাস্থল থেকে ৩০ মিটার দুরে পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও পুলিশ এগিয়ে আসেনি। এমনকি ঘটনার সময় পুলিশের ১০০ নম্বরে ফোন করেও কোনও সাহায্য মেলেনি। হাওড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশকে বলেছি, যারা এই ঘটনায় যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। শহিদ বেদি ভাঙার ব্যাপার দলের যে নেতার নাম উঠেছে তাঁকে শো কজ় করা হবে। দলীয় স্তরে এ নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’

বছর তিরিশ আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এই শহিদ বেদি তৈরি করেছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁদের বেশির ভাগই এখন তৃণমূলে। বেদির পিছনে এই বহুতল তৈরি করছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের দাদা অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতির উপস্থিতিতেই শুক্রবার দুপুরে হঠাৎ বেদিটি ভাঙা শুরু হয়। এক তৃণমূল কর্মী প্রতিবাদ করলে তখন কাজ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতী এসে হামলা করলে গুরুতর জখম হন জেলা কংগ্রেস নেতা শুভ্রজ্যোতি দাস ও রঞ্জিত দেবনাথ। তার পরে কংগ্রেস ও তৃণমূল কর্মীরা রাস্তা অবরোধ করেন। তখন হামলায় জখম হন ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যকরী সভাপতি অজয় মুখোপাধ্যায় ও অলোক চট্টোপাধ্যয়-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী।

Advertisement

আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা যখন তরোয়াল দিয়ে কোপাচ্ছিলেন তখনও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় এখনও র্পযন্ত ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আক্রান্তেরা কেউ এখনও কোনও অভিযোগ করেননি। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ বেদি ভাঙার কথা স্বীকার করে তৃণমূলের অভিযুক্ত ব্লক সভাপতি বলেন, ‘‘এটা ঠিকই আমি বেদিটি ভাঙতে বলেছিলাম। ভেবেছিলাম পাশেই একটা নতুন বেদি তৈরি করে দেব। কিন্তু কোনও দুষ্কৃতীর সঙ্গে আমার সর্ম্পক নেই। আমি ওদের ডাকিওনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন