স্মরণ: ২৩ জানুয়ারি, সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে তাঁর মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিবসের অনুষ্ঠান ম়ঞ্চ থেকেও কেন্দ্রকে নানা ভাবে বিঁধলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডে মঙ্গলবার নেতাজি মূর্তির পাদদেশে মাল্যদান করে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্র-রাজ্য বোঝাপড়ার জন্য যোজনা কমিশন তৈরি করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। দুর্ভাগ্য, তা তুলে দেওয়া হয়েছে! সেই প্রস্তাব মানা হলে কেন্দ্র রাজ্যকে বঞ্চনা করতে পারত না।’’ কেন্দ্রকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বাংলা জুড়ে নেতাজি, স্বামীজির জন্মজয়ন্তী পালন হয়। কিন্তু এমন মহান দেশপ্রেমিকদের জন্মদিনকে যারা জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করেনি, তাদের কাছ থেকে কিছুই আশা করা যায় না।’’ তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুকে মঞ্চে বসিয়েই নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেই রহস্য আজও উন্মোচিত হয়নি, এটা লজ্জার!’’
গত কয়েক বছর দার্জিলিঙে নেতাজি জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে থাকতেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার আবার রেড রোডে মূল সরকারি অনুষ্ঠানে ফিরলেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী জাতীয় ছুটির দাবি তুললেও বাম নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকারই কেন ‘দেশপ্রেম দিবস’ ঘোষণা করছে না? রাজ্য সরকারের জন্য তাদের মূল অনুষ্ঠান এ দিন রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে সরিয়ে নিয়েছিল বামেরা। সেখানেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, নেতাজি বা স্বামীজির উপরে কোনও দলের দখলদারি চলে না। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন, খুবই ভাল কথা। কিন্তু দেশপ্রেম দিবস ঘোষণা করছেন না। আর তিনি যদি নেতাজির প্রতি আন্তরিক ভাবে শ্রদ্ধাশীল হন, তা হলে কলকাতায় তাঁর কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্র এলগিন রোডের বাড়ি রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করুক। এই মঞ্চ থেকেই তা হলে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে সেলাম জানাব!’’
রাজ্য জুড়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এবং ব্লকে ব্লকে এ দিন ‘সুভাষ উৎসব’ পালন করেছে তৃণমূল। নানা অনুষ্ঠান ছিল বিজেপি-ও। নাকতলায় ‘জয়হিন্দ দেশপ্রেমী মঞ্চে’র উদ্যোগে নেতাজি জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ছিলেন আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী, পাপিয়া দেবরাজন, অভিনেত্রী পাপিয়া অধিকারী প্রমুখ।