উজ্জ্বলা দুর্নীতির খোঁজে বাড়ি-বাড়ি ঘুরবে তৃণমূল

কেন্দ্রীয় উজ্জ্বলা প্রকল্পের হিসেব চেয়ে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০৩:৫৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

আন্দোলন আর জনসংযোগ। এক ঢিলে দুই পাখি মেরে নড়বড়ে ভিত মজবুত করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই জন্য উজ্জ্বলা যোজনার দুর্নীতি খুঁজতে বাড়ি বাড়ি ‘অভিযান’ চালাতে চলেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল নেতারা।

Advertisement

কেন্দ্রীয় উজ্জ্বলা প্রকল্পের হিসেব চেয়ে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, ব্লকে ব্লকে বুথে বুথে বিজেপির কাছ থেকে কালো টাকা ফেরত চাইতে হবে। সেটাই তাঁদের আন্দোলন। দলনেত্রীর সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই উজ্জ্বলা প্রকল্প নিয়ে কর্মসূচি নিয়েছে জেলা তৃণমূল। সেই কাজে দলীয় নেতা-কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাবেন। এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন শাসক দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্ব। তাতে বলা হয়েছে, ‘উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিজেপি নেতাদের ব্যাপক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিটি পরিবারে খবর নিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত বিজেপি নেতাদের খুঁজে বার করতে হবে।’

কী ভাবে তা সম্ভব?

Advertisement

শুরুতে গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে যোগাযোগ করে এলাকার উজ্জ্বলা প্রকল্প প্রাপকদের তালিকা তৈরি হবে। তার সঙ্গে মিলিয়ে কোন এলাকায় কোন বিজেপি নেতা-কর্মীর ‘প্রভাব’ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখবেন এলাকার তৃণমূল নেতারা। সংশ্লিষ্ট বিজেপি নেতা উজ্জ্বলা প্রকল্পের ক্ষেত্রে কতটা কী ‘প্রভাব’ খাটিয়েছেন, তা যাচাই করবেন তাঁরা। তার পরে এলাকার প্রাপকদের বাড়িতেও সরাসরি যেতে পারেন শাসক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করবেন তাঁরা। নথিগুলি তৈরির জন্য একটি ‘ফর্ম্যাট’ বা রূপরেখাও তৈরি করা হচ্ছে বলে জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর।

লোকসভা ভোটে উত্তর ২৪ পরগনার পাঁচটি আসনের মধ্যে দু’টিতে জিতেছে বিজেপি। নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে শাসক দলের সংগঠন। খোদ জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে হেরে গিয়েছেন। প্রায়শই রাজনৈতিক অশান্তির কারণে শিরোনামে উঠে আসছে কলকাতা-ছোঁয়া জেলাটি। একাধিক পুরসভায় পরিস্থিতি সামলাতে যথেষ্ট কসরত করতে হচ্ছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে।

এই পরিস্থিতিতে উজ্জ্বলা প্রকল্প-কেন্দ্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপির দুর্নীতি যেমন প্রকাশ্যে আনা যাবে, তেমনই তৈরি হবে জনসংযোগ। সেই জন্য বাড়ি বাড়ি খোঁজখবরের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশ।

একই সঙ্গে যে-কোনও কর্মসূচির শেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ‘আপডেট’ দেওয়ার জন্য তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছে নির্দেশও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার কয়েকটি বিধানসভা এলাকায় সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত বিষয় দেখাশোনার কাজকর্ম শুরু করেছেন বিধানসভা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্তেরা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বঙ্গে বিজেপির ভাল ফলের পিছনে সোশ্যাল মিডিয়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়তি নজর দিচ্ছে তৃণমূল। এমনকি তৃণমূলকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘সক্রিয়’ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোরও।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন