গত বারে ছ’টি পুরসভাই জিতেছিল বিরোধীরা। মাঝে দলবদল করিয়ে তার একটি দখল করে তৃণমূল। এ বারে এই ছয়ের সঙ্গে যোগ হয়েছে ডোমকলও। সব জায়গাতেই আজ, রবিবার শক্তিপরীক্ষা শাসকদলের। সাম্প্রতিক একাধিক ভোটে দেখা গিয়েছে, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দ্রুত উঠে আসছে বিজেপি। তারা বা তাদের সহযোগী দলগুলি সেই প্রভাব কতটা বাড়াতে পারল, তারও পরীক্ষা হবে আজ।
সাতের মধ্যে চারটি পুরসভাই পাহাড়ে। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও মিরিক। শাসকদলের একাধিক নেতা গত অন্তত ১৫ দিন ধরে পাহাড় চষে বেড়িয়েছেন। ঘাঁটি গেড়ে রয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি কার্শিয়াং ও কালিম্পঙে কলেজ ভোটে সাফল্য পাওয়ার পরে পুরভোটেও সাফল্য তুলে আনতে চাইছেন অরূপ বিশ্বাস, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাঁদের সঙ্গে সমানে সঙ্গত করে চলেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, গৌতম দেব, সৌরভ চক্রবর্তীর মতো উত্তরবঙ্গের নেতারা। মোর্চার একচ্ছত্র আধিপত্য তাঁরা কতটা কমাতে পারেন, সে দিকেই তাকিয়ে পাহাড়বাসী।
রায়গঞ্জে কংগ্রেস-সিপিএম যৌথ ব্রিগে়ডের বিরুদ্ধে লড়াই শাসকদলের। এই পুরসভার মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছে। তার পরে প্রশাসক বসানো নিয়ে এর মধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই প্রশাসক, মহকুমাশাসক থেন্ডুপ নামগিয়েল শেরপাই আবার এ
বারের নির্বাচনী আধিকারিক। তাঁর কাছে এর মধ্যেই তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়ে বিস্তর অভিযোগ করেছেন বাম-কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত কি তবে রায়গঞ্জ হারানোর ভয় পাচ্ছেন? এমন প্রশ্ন উড়িয়ে দিলেও মোহিত যে শান্তিতে নেই, সেটা তাঁর ঘরোয়া মহলই বলছে। চিন্তা আরও বাড়িয়েছে তৃণমূলের দীর্ঘ সব মিছিল।
মুর্শিদাবাদের ডোমকলে ভোট মানেই সন্ত্রাস। দীর্ঘদিন ধরে এটাই দেখে আসছে রাজনৈতিক দলগুলি থেকে পুলিশ-প্রশাসন, সকলেই। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে ১৪ জন খুন হয়েছিল এখানে। গত বিধানসভা ভোটেও যে একটি মাত্র খুনের ঘটনা ঘটে, সেটাও ডোমকলেই। সীমান্ত ঘেঁষা এই জনপদে রবিবার প্রথম পুরভোট। তার আগে বহরমপুরে এক টিএমসিপি কর্মীর খুন হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে পুলিশের। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করানোটাই এখন তাঁদের প্রধান চিন্তা।
দক্ষিণের পূজালিতে এর মধ্যেই তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলি। বিশেষ করে বিজেপি। গত কুড়ি বছর ধরে এই পুরসভা জিতছে কংগ্রেস। তবে গত বারে কংগ্রেস পুরবোর্ড ভাঙিয়ে তা দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল। এ বারে বিজেপিও যে দ্রুত উঠে আসছে, তার প্রমাণ মিলেছে এলাকায় তাদের উপস্থিতি ও প্রচারে। তারা যে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে, তা উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তবে অনেকেই মানছেন, এখানে শাসকদলের পক্ষে লড়াইটা সহজ হবে না।
বাকি জবাব মিলবে ১৭ তারিখ, ভোটবাক্স খোলার পরে।