TMC MLA Tapas Saha Died

প্রয়াত তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা, শোকপ্রকাশ মমতার

গত মঙ্গলবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাপস। তার পর তাঁকে কলকাতায় বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৫ ০৯:৩০
Share:

তাপস সাহা। —ফাইল চিত্র।

প্রয়াত হলেন নদিয়ার তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। গত মঙ্গলবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তার পর তাঁকে প্রথমে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে, পরে কলকাতায় বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে নদিয়ার জেলা রাজনীতিতে তো বটেই, রাজ্য রাজনীতিতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘‘নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক, আমাদের তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, শ্রী তাপস সাহার অকালমৃত্যুতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি আমার অনেক দিনের পুরাতন সহকর্মী ছিলেন। তাঁর এই মৃত্যু জেলা তথা বাংলার রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও অগণিত সমর্থককে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’’

দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তাপসের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভায়। সেখানে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র প্রমুখেরা।

Advertisement

রাজ্য বিধানসভায় তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার মরদেহ। শেষশ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নদিয়া জেলারই চাপড়া কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমান জানিয়েছেন, জেলা থেকে দলের একাধিক পদাধিকারী কলকাতায় যাচ্ছেন। প্রয়াত বিধায়কের শেষকৃত্য কবে, কখন এবং কী ভাবে হবে, তা দল এবং তাপসের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেই স্থির হবে বলে জানিয়েছেন রুকবানুর।

জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহভাজন ছিলেন তৎকালীন যুব নেতা তাপস সাহা। ২০১১ সালে তেহট্টে জোড়াফুল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সে বার দল ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করে গৌরীশঙ্কর দত্তকে। দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে পড়েন তাপস। ভোট কাটাকাটির খেলায় ‘পরিবর্তনের ঝড়েও’ তেহট্টে আসনে জয়ী হয় বামেরা।

দলের তৎকালীন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্করকে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তাপসকে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। পরে অবশ্য দল প্রয়াত এই নেতাকে ফের ফিরিয়ে নেয়। দলের কাজেও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যেতে থাকে তাপসকে। ২০১৬ সালে নদিয়ারই পলাশিপাড়া কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে জয়ী হন তিনি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাপসকে তেহট্টের প্রার্থী করে রাজ্যের শাসকদল। জয়ী হন তিনি। নদিয়ার দু’টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে টানা দু’বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তাপস। গত বছর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সামনে এসেছিল তাপসের নাম। চাকরি দেওয়ার নাম করে তিনি কয়েক কোটি টাকা তুলেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁর কণ্ঠস্বরও সংগ্রহ করে সিবিআই।

তেহট্ট নদিয়ার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের অধীন। কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত আর এক বিধানসভা কেন্দ্র কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ গত ২ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন। কালীগঞ্জের পর তেহট্টের বিধায়কেরও মৃত্যু হওয়ায় এই দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement