উত্তরবঙ্গের বিপর্যস্ত মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠালেন সাংসদ-অভিনেতা দেব। ছবি: সংগৃহীত।
দুর্যোগে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পাঠালেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেব। কোচবিহারের পশ্চিম ঘুঘুমারি, বড়ুয়াপা়ড়া, তোর্সা নদীর চরের বিভিন্ন গ্রামে শুকনো খাবার-সহ ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছেন দেব। অভিনেতা-সাংসদের ছবি সম্বলিত ব্যানার টাঙিয়ে মঙ্গলবার সেই ত্রাণসামগ্রী বিলি করেছে তাঁর ‘টিম’। সেই ব্যানারে লেখা, ‘উত্তরের বন্যায় দেব’।
ঘটনাচক্রে, দেব যেখানকার সাংসদ সেই ঘাটালও প্লাবনপ্রবণ। ফি-বছর সেখানে বন্যা হয়। এ বারেও ঘাটালের বিস্তীর্ণ অংশ জলমগ্ন হয়েছে। নিজের সংসদীয় এলাকার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের মানুষেরও পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হলেন দেব। দক্ষিণবঙ্গের ঘাটালের সাংসদ হলেও নিজের ছবির কাজে উত্তরবঙ্গে প্রায়শই গিয়ে থাকেন দেব। তাঁর সাম্প্রতিক বিভিন্ন ছবির শুটিং হয়েছে উত্তরবঙ্গে। জনপ্রতিনিধি এবং অভিনেতা হিসাবে নিজের ‘দায়বদ্ধতা’ থেকেই দেব বিপর্যস্ত মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার দেব বলেন, ‘‘এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে ভাবে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাতে আমাদের সকলেরই উচিত তাঁদের পাশে নিজেদের সাধ্যমতো দাঁড়ানো। আমি সেই মানসিকতা থেকেই ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছি। দুর্যোগ কেটে গিয়ে আবার সকলে যএন স্বাভাবিক জীবনে পিরে আসেন, এটাই আপাতত আমার প্রার্থনা।’’
উল্লেখ্য, গত মেয়াদের লোকসভার অধিবেশন শেষ হওয়ার দিন দেব রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। তার পরে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়ে দেবের মত পরিবর্তন করান। লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারের পর্বে আরামবাগের একটি জনসভায় মমতার সঙ্গে একই হেলিকপ্টারে গিয়েছিলেন দেব। সেই মঞ্চ থেকে দেবের উপস্থিতিতেই মমতা বলেছিলেন, ‘‘দেব দিদির কাছে একটা আব্দার করেছে। আমি কি সেই আব্দার না-রেখে পারি!’’ দেব ‘আব্দার’ করেছিলেন, ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান’ কার্যকর করতে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হোক। দেবকে দেওয়া কথা রেখেছেন মমতা। গত রাজ্য বাজেটে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য অর্থের সংস্থান রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান’ কার্যকর করার বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। মাস কয়েক আগে সেই সংক্রান্ত একটি বৈঠকে দেব নিজেও হাজির ছিলেন। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণের হাত বাড়িয়ে দিলেন ঘাটালের সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো জানি, বন্যা এবং বিপর্যয় কী জিনিস! ঘাটালের সাংসদ হিসাবে বন্যার জলের সঙ্গেই আমার বসবাস। উত্তরবঙ্গের মানুষের দুর্দশা আমি বুঝতে পারছি।’’