‘কাঁচরাপাড়ার কাঁচা ছেলের হাত থেকে দল বাঁচল’: পার্থ

পার্থবাবু বলেন, ‘‘এতদিন পরে বোধোদয় হল! বিবেকের তাড়নায় আগেই কেন দল ছাড়েননি উনি?’’ সিবিআই-এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করতেই মুকুল আদতে দল ছেড়েছেন বলে পার্থবাবুদের অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৯
Share:

দল থেকে মুকুল রায় ইস্তফা দেওয়ায় ‘হাঁফ ছেড়ে বাঁচল’ তৃণমূল। দিল্লিতে মুকুলের সাংবাদিক সম্মেলন টিভিতে দেখার পরেই বুধবার এ ভাবেই প্রতিক্রিয়া জানালেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি দলের ঐক্য অটুট দেখাতে এ বারই প্রথম দলীয় কর্মীদের নিয়ে নজরুল মঞ্চে বিজয়া সম্মেলন করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে এত বড় মাপে বিজয়া সম্মেলন হয়নি।

Advertisement

যদিও দলের অন্দরে খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত যে কোর কমিটির বৈঠক করেন, সেটিকেই আগামী ২৭ অক্টোবর নজরুল মঞ্চে নিয়ে গিয়ে বড় আকার দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্য, সংগঠনের সর্বস্তরে নির্দিষ্ট বার্তা দেওয়া। দলের বিধায়ক, সাংসদদের পাশাপাশি পুরসভা ও পঞ্চায়েতের সদস্যদেরও ওই বৈঠকে ডাকা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র চলতে পারে না ’ সরব মুকুল

Advertisement

তৃণমূল কখনও কংগ্রেস, কখনও বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধায় তিনি দল ছাড়লেন বলে সাংবাদিকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন মুকুল। কিন্তু তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্য ‘অসাড়’ বলে দাবি করে পার্থবাবু বলেন, ‘‘এতদিন পরে বোধোদয় হল! বিবেকের তাড়নায় আগেই কেন দল ছাড়েননি উনি?’’ সিবিআই-এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করতেই মুকুল আদতে দল ছেড়েছেন বলে পার্থবাবুদের অভিযোগ।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দাবি, হিম্মত থাকলে মুকুলবাবু তৃণমূলের যাবতীয় অপকর্মের কথা খোলসা করুন। তাঁর কথায়, ‘‘সততার নামাবলি গায়ে দিয়ে অসততার যে রাজনীতি চলছে, তার পর্দাফাঁস হবে, এটাই চাইব।’’ তাঁরা কি মুকুলবাবুকে ‘সৎ রাজনীতিক’ মনে করেন? অধীরবাবুর জবাব, ‘‘অসততার মধ্যে যিনি কাজ করেছেন, তিনি তো সব জানবেন। অসৎ লোকেরা অসৎদের কথা ভাল জানে!’’

মুকুলের তৃণমূল-ত্যাগ নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘আমরা বলেছিলাম, ভাগ মুকুল ভাগ! উনি ভেগে গিয়েছেন!’’ মুকুলবাবু দক্ষ সংগঠক এবং তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতায় যে কোনও দল উপকৃত হতে পারে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘উনি যে দলে যাবেন, সেই দলই লাভবান হবে।’’ তবে মুকুলের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘উনি আবেদন করলে বিবেচনা করা হবে।’’

ধর্মতলায় দাঁড়িয়ে ‘ভাগ মুকুল ভাগ’ স্লোগান দিয়েছিলেন বিজেপি-র তৎকালীন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। ধর্মতলায় দাঁড়িয়েই সেই স্লোগানের প্রসঙ্গ এনে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম এ দিন কটাক্ষ করেছেন, ‘‘ওই ভাগ মানে আসলে বখরা! তৃণমূল আর বিজেপি-র লড়াই ভাগাভাগি, হিসসা নিয়ে!’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘বিদায়বেলায় মুকুলবাবুকে অনেক কিছু বলে যেতে হবে। তৃণমূলের হয়ে কী কী অপকর্ম উনি করেছেন, প্রকাশ্যে সে সব স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া উচিত ওঁর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন