সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একা নন, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার অনিয়ম নিয়ে তদন্তের সূত্রে এ বার তৃণমূল সাংসদ তাপস পালকে নোটিস পাঠাল সিবিআই।
রোজভ্যালি-কাণ্ডে সুদীপবাবুকে আগেও দু’বার নোটিস পাঠিয়েছিল এই কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ মেনে সিবিআই দফতরে যাওয়া এড়িয়েই চলছিলেন তিনি। ২৪ ঘণ্টা আগে সোমবার বিকেলেও সিবিআই তাঁকে এ ব্যাপারে ই-মেল পাঠালে জবাবে সুদীপ জানান, এখনই তাঁর পক্ষে সিবিআই দফতরে যাওয়া সম্ভব নয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঙ্গলবার অবস্থান পাল্টে ফেলেন সুদীপবাবু। এ দিন সিবিআইয়ের তরফে তাঁকে ই-মেল বার্তা পাঠানোর পর মমতার সঙ্গে কোনও কথা বলেননি লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা। বরং সিবিআই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে যাবেন।
সিবিআইয়ের নোটিস নিয়ে অপর সাংসদ তাপসবাবুর প্রতিক্রিয়া অবশ্য পাওয়া যায়নি। তবে সামগ্রিক ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে দলের তরফে। এ দিন বিকেলে আবার দিল্লিতে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক থেকে মোদী-অমিত শাহদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শাণাতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘ওঁদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। বললেই গব্বরের ভয় দেখাবে।’’ পরে সিবিআইয়ের নোটিস প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল নেত্রী নোট বাতিলের বিরোধিতা করার ফলেই বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। নোটিসের সময় দেখেই বোঝা যাচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ-ও বোঝা যাচ্ছে, সিবিআই মোদীর হাতের পুতুল হয়ে গেছে। তা না হলে কেনই বা ওরা আগে তদন্ত না করে থমকে থাকল, আর এখন হঠাৎ করে নোটিস পাঠানো শুরু হল? ’’
তবে এর পরেও একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত সিবিআই দফতরে যেতে কেন রাজি হয়ে গেলেন সুদীপ? একটি সূত্রের মতে, এর আগে নানা অজুহাতে সিবিআইয়ের তলব এড়িয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে সিবিআই-ও কঠোর মনোভাব নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কেন্দ্রীয় এই তদন্ত এজেন্সিকে আর এড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিলেন না এই তৃণমূল সাংসদ। সুদীপবাবু অবশ্য বলেন,‘‘নিজে গিয়েই জানতে চাই ওদের অভিযোগটা কী?’’ তবে ঘনিষ্ঠ মহলে সুদীপবাবুর আক্ষেপ, তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। সিবিআই দফতরকে তিনি এড়িয়ে গেলে বিতর্ক বাড়ছে।