বিরোধী দলনেতাকে বোঝাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী

কংগ্রেস ভাঙছি না, বিজেপিকে ঠেকাচ্ছি

জাতীয় স্তরে যখন বিজেপি-বিরোধী মঞ্চ গড়ে তোলার তৎপরতা চলছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় ব্রিগে়ড সমাবেশে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে আমন্ত্রণ করার কথা বলছেন, তার মধ্যেই আবার কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূলে যোগদান চলছে— এই নিয়ে দিল্লিতেও চর্চা হয়েছে। বাংলায় দলের ভাঙনে উদ্বিগ্ন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল খোঁজ নিয়েছেন প্রদেশ নেতাদের কাছে। এমতাবস্থায় বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দলবদলের প্রসঙ্গেই কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৪:০১
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে এখন ঐক্যের বাতাবরণ। আঞ্চলিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে বিরোধী শক্তিকে সংহত করতে তৎপর কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্বও। এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী দলনেতাকে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিলেন, বিজেপিকে ঠেকানোই তাঁর মূল লক্ষ্য। বিরোধী শিবিরকে ভাঙানো নয়।

Advertisement

গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে নয় নয় করে ১৭ জন কংগ্রেস বিধায়ককে দলে নিয়েছে তৃণমূল। তার মধ্যে সর্বশেষ ২১ জুলাই তৃণমূলের ‘শহিদ দিবসে’র মঞ্চে হাজির ছিলেন চার বিধায়ক— মালদহের সমর মুখোপাধ্যায় ও সাবিনা ইয়াসমিন এবং মুর্শিদাবাদের আবু তাহের খান ও আখরুজ্জামান। লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে কংগ্রেস লড়াইয়ে আছে মূলত ওই দুই জেলাতেই। জাতীয় স্তরে যখন বিজেপি-বিরোধী মঞ্চ গড়ে তোলার তৎপরতা চলছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় ব্রিগে়ড সমাবেশে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে আমন্ত্রণ করার কথা বলছেন, তার মধ্যেই আবার কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূলে যোগদান চলছে— এই নিয়ে দিল্লিতেও চর্চা হয়েছে। বাংলায় দলের ভাঙনে উদ্বিগ্ন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল খোঁজ নিয়েছেন প্রদেশ নেতাদের কাছে। এমতাবস্থায় বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দলবদলের প্রসঙ্গেই কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।

ফোনে কথোপকথন নিয়ে শাসক ও বিরোধী শিবিরের কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। তবে সূত্রের খবর, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, তৃণমূল দল ভাঙাচ্ছে না। কংগ্রেসের যে বিধায়কেরা শাসক দলে যোগ দেওয়ার জন্য আগ্রহী হচ্ছেন, তাঁদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে। কারণ, বিজেপি এখন বাংলায় দল সম্প্রসারণে মরিয়া। অন্য দল থেকে নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের পেলে ‘যথাযোগ্য মর্যাদা’ দিয়ে তাঁদের সংগঠনে স্থান দেওয়ার কথা বলছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই এখন বিজেপিকে ঠেকানোই সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত। মান্নান অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, বিধায়কেরা কেউ বিজেপিতে গেলে দলত্যাগ-বিরোধী আইনে তাঁদের পদ খারিজ করে দেওয়া তো সোজা! তাই বিজেপিকে আটকানোর জন্য দলবদলের প্রয়োজন নেই।

Advertisement

এই বার্তা বিনিময়ের পরে আপাতত বিধানসভার অন্দরে হাল্কা কিছু সমঝোতার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যানের পদ কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আবার কংগ্রেসও ২১ তারিখে তৃণমূলের মঞ্চে যাওয়া চার বিধায়কের বিরুদ্ধে আপাতত স্পিকারকে চিঠি দেয়নি। এমনকী, মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন বিলের উপরে বুধবার তালিকার বাইরে থেকেই ‘দলত্যাগী’ অপূর্ব সরকারকে বলার সুযোগ দিয়েছিলেন স্পিকার। অতীতে মানসবাবুকে এমন সুযোগ দেওয়ায় সভার মধ্যেই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল কংগ্রেস। অপূর্বের ক্ষেত্রে কিন্তু বাধা দেওয়া হয়নি। বর্ষীয়ান এক কংগ্রেস বিধায়কের কথায়, ‘‘যা হচ্ছে, সবই কৌশলগত কারণে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন