WB Municipal Election

TMC: প্রাপ্ত ভোটে যেন ‘দাগ’ না থাকে, চর্চা দলেও

দলের ভোট বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে অবশ্য তৃণমূলের অন্দরে অন্য ব্যাখ্যাও রয়েছে। দলের একাংশ মনে করেন, রাজ্য সরকারের এমন কিছু প্রকল্প রয়েছে যা একেবারে প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছেছে। আবার এমন প্রকল্পও রয়েছে যা ব্যক্তিগত ভাবে একই বাড়িতে একাধিক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২২ ০৮:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভোটের দিনের অশান্তিকে সংখ্যার নিরিখে উড়িয়ে দিলেও ‘ছাপ্পা’ নিয়ে পুরোপুরি চিন্তামুক্ত নয় তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ প্রাপ্ত ভোটের হিসেব নিয়ে ‘দুশ্চিন্তায়’ রয়েছেন। প্রদত্ত ভোটের আশি বা নব্বই শতাংশ ভোট দলীয় প্রার্থীরা পেলে তা স্বস্তিদায়ক হবে না বলে মেনেও নিচ্ছেন তাঁদের অনেকে।

Advertisement

কলকাতা-সহ বাকি চার কর্পোরেশনের ভোটে তৃণমূলের একাধিক প্রার্থীই বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন। কোনও কোনও ওয়ার্ডে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জিতেছেন দলের প্রার্থীরা। দলের নেতারাই বিস্মিত হয়েছিলেন, একটি ওয়ার্ডে প্রদত্ত ভোটের ৯৭ শতাংশ তৃণমূল পাওয়ায়। প্রকাশ্যে তাকে জনসমর্থনের প্রতিফলন হিসেবে চিহ্নিত করলেও আড়ালেও অনেকেই মেনে নিয়েছেন প্রাপ্ত ভোটের এই হারে ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। এ বারে ১০৮ টি পুরসভা ভোটের পরেও সেই চিন্তা দেখা গিয়েছে দলের অন্দরে। রবিবারের ভোট সম্পর্কে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘বিরোধীরা অভিযোগ করবেনই। তাঁদের অভিযোগে প্রমাণ হয় না যে ছাপ্পা ভোট হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ছাপ্পার অভিযোগ কতটা সত্যি তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে প্রাপ্ত ভোটের হিসেবে।’’

দলের ভোট বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে অবশ্য তৃণমূলের অন্দরে অন্য ব্যাখ্যাও রয়েছে। দলের একাংশ মনে করেন, রাজ্য সরকারের এমন কিছু প্রকল্প রয়েছে যা একেবারে প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছেছে। আবার এমন প্রকল্পও রয়েছে যা ব্যক্তিগত ভাবে একই বাড়িতে একাধিক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে। তার ফলে ভোট বৃদ্ধির ইতিবাচক সম্ভাবনাও রয়েছে।

Advertisement

২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বিনা তিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল শাসক দল। বিভিন্ন স্তরে দলের বিশ্লেষণে এটাও স্বীকার করা হয়েছিল যে সেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রভাব সরাসরি পড়েছে লোকসভা নির্বাচনে। এ বার পুরভোটের আগে বিভিন্ন মহলে সেই প্রশ্ন উঠলে গোড়াতেই তা নিয়ে দলের তরফে স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রথমে কলকাতা ও পরে বাকি পুরসভার ভোটে, অভিযোগের ভিড়ে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সব মহলেই। প্রশ্ন উঠেছে, ভোট মেশিনারিতে দলের নিয়ন্ত্রণ তাহলে কোথায়?

এ বারের পুরভোটে বহু জায়গা থেকে পাড়ায় পাড়ায় ‘অপরিচিত’ রাজনৈতিক কর্মীদের তৎপরতার কথাও তৃণমূল নেতৃত্বের কানে এসেছে। সাধারণ চিত্র না হলেও বহু পুরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এইরকম অপরিচিত ‘কর্মী’ বাইক বা গাড়িতে ঘুরছেন, ভোটের ‘কাজ’ করেছেন বলেও বেশ কয়েক জন বিধায়ক এবং দলীয় পদাধিকারীর তরফে নেতৃত্বের কানে দেওয়া হয়েছে। যে পুরসভা মসৃণ ভাবেই তাঁরা জিতবেন, সেখানে এই অপ্রয়োজনীয় সক্রিয়তা নিয়ে বিধায়কদের নালিশ এসেছে কলকাতায়। দক্ষিণবঙ্গে দলের এক জেলার নেতার কথায়, ‘‘কোথাও কোথাও প্রার্থীরা নিজেরাই জয় নিশ্চিত করতে কিছু পদক্ষেপ করেছেন। তা দলের প্রয়োজন ছিল না। এবং তার জেরেই একটা সাধারণ ধারণা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।’’ সে ক্ষেত্রে অনুপস্থিত বা মৃত ভোটারদের ভোট পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে বলেও তাঁর আশঙ্কা। শহরাঞ্চলে এটাও মোট ভোটারের কমবেশি ২০ শতাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন