টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত। ফাইল চিত্র।
কলেজে ভর্তিতে ‘জুলুমবাজি’ বন্ধ করতে প্রয়োজনে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুরু হয়ে গিয়েছে পুলিশি ধরপাকড়ও। এত দিনে ন়ড়েচড়ে বসে মধ্য কলকাতার কলেজগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে আজ, সোমবার তৃণমূল ভবনে বৈঠক ডাকল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)! ভর্তি দুর্নীতি নিয়ে আজই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ডিএসও। টানা দু’সপ্তাহের বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে এসএফআই-ও।
টিএমসিপি সূত্রের বক্তব্য, তৃণমূল ভবনে মধ্য কলকাতার কলেজগুলির দু’জন করে প্রতিনিধিকে তলব করা হয়েছে। সেখানে দুর্নীতি থেকে ছাত্রনেতাদের দূরে থাকতে বলে সর্তক করা হবে বলে ইঙ্গিত টিএমসিপি নেতৃত্বের। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, এত দিন শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব কোথায় ছিলেন? মুখ্যমন্ত্রী কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ পুলিশকে দেওয়ার পরে তাঁদের টনক নড়ল? এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘এখন বৈঠক একেবারে লোকদেখানো। যাঁরা যাঁদেরকে বার্তা দেবেন—দু’পক্ষই বখরার ভাগ পান!’’
কলেজে কলেজে যখন ছাত্র ভর্তির নামে যেমন খুশি টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠছে, তখন সংবাদমাধ্যমের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত। এত দিন পরে বৈঠক করে সর্তক করতে চাওয়ার মানে কী? জয়া রবিবার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সংগঠনের জেলা নেতৃত্বকে তাঁরা ভার দিয়েছিলেন। তাতে কাজ হচ্ছে না দেখে এখন নিজেরা বৈঠক ডাকছেন। জয়ার বক্তব্য, ‘‘কলকাতার এলাকা ধরে ধরে ছাত্রনেতা-নেত্রীদের নিয়ে পরপর বৈঠক হবে। অভিযোগ যা এসেছে, সবই মূলত কলকাতার।’’ তাঁদের দাবি, বারাসতের একটি অভিযোগ উঠেছিল। সেখানে পুলিশই এক ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করেছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, টিএমসিপি-র স্থানীয় নেতৃত্বকে ডেকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরামর্শ জয়াকে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যিনি নিজে সাফ বলছেন, ‘‘ছাত্র সংগঠন হোক বা তার বাইরে অন্য কেউ, অভিযোগ পেলে বার করে দেওয়া হবে।’’
টিএমসিপি’র পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা লাগোয়া বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। তৎপর হয়েছে বিভিন্ন জেলা পুলিশও। কলকাতা পুলিশের মতোই বিধাননগর পুলিশ বারুইপুর জেলা-পুলিশ, ডায়মন্ড হারবার জেলা-পুলিশ, নদিয়া-মুর্শিদাবাদ পুলিশ বা বনগাঁ থানার তরফেও বিভিন্ন এলাকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে, ভর্তির নাম করে টাকা চাওয়া হলে পুলিশকে যেন জানানো হয়। এই তৎপরতাকে স্বাগত জানাচ্ছেন অনেকে। তবে কারও কারও প্রশ্ন, ‘ব্যাধি’ কত বড় আকার নিলে এ ভাবে দিকে দিকে পুলিশকে আবেদন করতে হয়!