আতঙ্ক নয়, মমতার ঘুঁটি আক্রমণই

ভোটের মুখে যখন নারদ ফুটেজ ফাঁস হয়েছিল, এবং তাকে অস্ত্র করে তাঁকে কোণঠাসা করতে নেমেছিলেন বিরোধীরা, তখনও স্নায়ু ধরে রেখেছিলেন তিনি।

Advertisement

শঙ্খদীপ দাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০৩:২২
Share:

ভোটের মুখে যখন নারদ ফুটেজ ফাঁস হয়েছিল, এবং তাকে অস্ত্র করে তাঁকে কোণঠাসা করতে নেমেছিলেন বিরোধীরা, তখনও স্নায়ু ধরে রেখেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে পোড় খাওয়া নেত্রী কৌশলে সামনে রেখেছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিকে। বলেছিলেন, ‘‘সমালোচনা করুন। কিন্তু চোর বদনাম দেবেন না।’’

Advertisement

নারদ কাণ্ডে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পর দলের কিছু নেতা ভিতরে ভিতরে টলে গেলেও, এ বারও সেই এক অবস্থানই নিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,—তৃণমূলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে পাল্টা আক্রমণের হাঁটা।
তার ইঙ্গিত মঙ্গলবারই কিছুটা দিয়েছেন মমতা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাজ্যের অস্বস্তি হলেও বলেছিলেন, ‘‘রায় ইতিবাচক।’’

চব্বিশ ঘণ্টা পর বুধবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ওই বৈঠক শেষ হওয়ার পর কিছু মন্ত্রীকে ডেকে মমতা বলেন, রক্ষণাত্মক হওয়ার প্রশ্নই নেই। তা হলেই পেয়ে বসবে ওরা। পরে এক শীর্ষ মন্ত্রী জানান, ‘‘এমনিতে দিদির মুড ভালই রয়েছে। শুধু কেন্দ্রের প্রসঙ্গ উঠতেই ওঁর রাগ বেরিয়ে পড়ছে। উনি বুঝতে পারছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমে পড়েছে বিজেপি।’’

Advertisement

প্রশ্ন উঠতে পারে এই সঙ্কটের মধ্যেও কেন আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে চাইছেন মমতা। জবাবে দলের একাধিক শীর্ষ সারির নেতা বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা এর আগে জেলে যাননি এমন তো নয়! তাতে দলের জনভিত্তিতে কী প্রভাব পড়েছে? দশ জন বা বারো জন নেতা জেলে গেলে এ বারও ফারাক হবে না। কারণ, কেবল একজনকে দেখেই এই দলকে ভোট দেন মানুষ।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের পুঁজি একটাই। তা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাবমূর্তি। এবং ডান-বাম-মধ্যে তাঁর সমতুল কোনও নেতা এই মুহূর্তে নেই বাংলায়। তা ছাড়া সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামে গঞ্জে মানুষকে যে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে সরকার তাও এর আগে হয়নি।’’

অবশ্য এই রাজনৈতিক অবস্থানের সমান্তরালে শাসক দল ও সরকারে এখন উদ্বেগের বিষয় দুটি। বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের মেরুকরণের রাজনীতির জন্য বাংলায় যাতে কোনও আইনশৃঙ্খলার সমস্যা তৈরি না হয়। এবং দ্বিতীয় ও বড় উদ্বেগের ব্যাপার হল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে আর্থিক সংকটে ফেলার যদি খেলা শুরু হয়! তবে ইতিবাচক যে, তেমন কোনও পদক্ষেপ কেন্দ্র এখনও নেয়নি। বরং একশ দিনের কাজ প্রকল্প নিয়ে এ দিন দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিল গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। বাংলার জন্য শ্রম বাজেট ওই বৈঠকে এ ধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন