পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যার ল্যাবরেটরি বা গবেষণাগার আছে। এ বার রাজ্যের প্রতিটি সরকারি স্কুলে গণিতের জন্যও পৃথক গবেষণাগার তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এসসিইআরটি)। এই বিষয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও পাঠিয়েছে তারা। ইতিহাস, ভূগোলের মতো বিষয়েও গবেষণাগার প্রয়োজন বলে জানান এসসিইআরটি-র কর্তারা।
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পরীক্ষার উত্তরপত্র যাচাই করতে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বুঝতে পারছেন, বহু পরীক্ষার্থীরই গণিতে গভীরতার অভাব রয়েছে। হাতে-কলমে শিক্ষার অভাবই তার মূল কারণ। পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যার মতো বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে গবেষণাগার থাকলেও বাদ পড়ে গিয়েছে গণিত।
এসসিইআরটি-র গবেষক সুব্রত বিশ্বাস জানান, বীজগণিতের অনেক জটিল সূত্র হাতে-কলমে শেখানো যায় ছাত্রছাত্রীদের। জ্যামিতি বা পরিমিতির মতো বিষয়ে তো অবশ্যই হাতে-কলমে শিক্ষার প্রয়োজন আছে। বিভিন্ন আকারের জিনিসপত্রের সাহায্যে জটিল গণিত সহজ করা সম্ভব। কিন্তু গবেষণাগারের অভাবে সেটা করে দেখানো যায় না।
সম্প্রতি বেসরকারি এক গবেষণায় গণিত ও ইংরেজির প্রতি পড়ুয়াদের ভীতির বিষয়টি উঠে এসেছে। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘স্কুলশিক্ষা দফতরে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে প্রায় ৪০টি সরকারি স্কুল রয়েছে। প্রথমে অন্তত ওই সব স্কুলে গবেষণাগার চালু করা হোক। এসসিইআরটি-র সদর দফতরে একটি কক্ষকে গণিতের গবেষণাগার করার কাজ চলছে। ওই কক্ষে শিক্ষকেরা প্রশিক্ষণ নেবেন।’’
সিবিএসই, আইসিএসই বোর্ডের বহু স্কুলে গণিতের গবেষণাগার রয়েছে। দেশের কয়েকটি আইআইটি এবং বিদেশের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানেও রয়েছে গণিতের গবেষণাগার। গণিতের পাশাপাশি ভূগোল-ইতিহাসের মতো বিষয়েও এ ধরনের গবেষণাগার তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে এসসিইআরটি।
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে আমূল পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মঙ্গলবার বিধাননগর কলেজে তৃতীয় আঞ্চলিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কংগ্রেসের আয়োজন করেছিল রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং জৈব প্রযুক্তি দফতর। সেখানে ব্রাত্যবাবু বলেন, ‘‘একটি ‘ফান্ড’ (টাকা) পাওয়া গিয়েছে। তা দিয়ে ইতিমধ্যে ল্যাবরেটরি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। জেলার প্রতিটি স্কুলেই এই সংস্কারের কাজ হবে।’’