হাতির জন্য ‘হোয়াটসঅ্যাপ’।
দক্ষিণবঙ্গে ট্রেনে হাতির কাটা পড়া বন্ধ করতে এ বার রেল ও বন দফতরের হাতিয়ার জনপ্রিয় এই মোবাইল অ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সমন্বয় বাড়ানোর এই উদ্যোগ নিয়ে শুক্রবার বিকাশ ভবনে বৈঠকও করেছেন দুই দফতরের কর্তারা।
গত অগস্টে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোদাপিয়াশালে পুরুলিয়া এক্সপ্রেসের ধাক্কায় দুই শাবক-সহ তিনটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল। দলের বাকি হাতিরা ‘রেল অবরোধ’ শুরু করে। ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল। সেই ঘটনার ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে সামনে আসে রেল ও বন দফতরের সমন্বয়ের অভাব। রেলের অভিযোগ ছিল, হাতির পাল রেললাইন পারাপার করতে পারে, এমন খবর সে দিন তাদের কাছে পৌঁছয়নি। ফলে আগাম সতর্কতা নিতে পারেনি তারা।
বন দফতরের একাংশও সেই সমন্বয়ের অভাবের কথা মেনে নেন। এই গাফিলতির জন্য সংশ্লিষ্ট বনকর্তাদের বদলি করা হয়েছে বলেও বন দফতর সূত্রের দাবি। বনকর্তাদের একাংশ জানান, উত্তরবঙ্গে আগে বহু বার ট্রেনে কাটা পড়েছিল হাতি। তা নিয়ে হইচইও হয়েছিল। সেই সমস্যা মেটাতে সেখানে রেল ও বন দফতর সমন্বয় কমিটি গড়েছে। কিন্তু রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে হাতি-সমস্যা থাকলেও তেমন কোনও কমিটি ছিল না।
এ দিন রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) প্রদীপ ব্যাস জানান, গোদাপিয়াশালের ঘটনার পরেই পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে রেলের চাকায় হাতির মৃত্যু রুখতে সমন্বয় কমিটি গড়া হয়েছে। তার মাথায় রয়েছেন বন্যপ্রাণ শাখার অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বনপাল। রয়েছেন বন দফতর ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পদস্থ অফিসারেরাও। এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রেল ও বন দফতরের কর্তাদের নিয়ে একটি ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ তৈরি হবে। রেল লাইনের আশপাশে হাতি থাকলেই তা ওই গ্রুপে জানানো হবে। সেই খবর পেয়ে রেল ওই এলাকায় ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করবে। সতর্ক করে দেওয়া হবে চালকদেরও।
বন দফতর জানিয়েছে, এই বার্তা আদান-প্রদানের ‘নোডাল অফিসার’ হিসেবে কাজ করবেন খড়্গপুর ও পাঞ্চেৎ বিভাগের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার। খড়গপুর ও আদ্রা ডিভিশনের রেলকর্তারা নিয়মিত ওই দুই বনকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। প্রতি তিন মাস অন্তর সমন্বয়।
বনকর্তারা জানান, হাতির মৃত্যু আটকানোর পাশাপাশি ট্রেনে করে বন্যপ্রাণীর চোরাপাচার রোখা নিয়েও এ দিন বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।