মামলার জেরে কাঠগড়ায় স্কুল সার্ভিস কমিশন।
তথ্য জানার অধিকার আইনে আর্জি জানিয়ে এ রাজ্যে খুব কম উত্তর মেলে, মিললেও সেই উত্তর অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ হয় না বলে অভিযোগ। এই জোড়া অভিযোগ কতটা সত্যি, তার প্রমাণ পেলেন এক শিক্ষিকা পদপ্রার্থী। নিয়োগের ওই লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর ছিল ৫৫। কিন্তু পরীক্ষক তাঁকে দিয়েছেন ৫৯! অন্তত এমনটাই দাবি রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর।
ঋতু বেরা নামে এক তরুণী একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসেছিলেন। মেধা-তালিকায় নাম নেই দেখে একাধিক অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, লিখিত পরীক্ষায় ৫৫ নম্বরের মধ্যে তিনি কত পেয়েছেন, তা জানতে চেয়ে তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনে আবেদন করেন। তার উত্তরেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের সহ-সচিব লিখিত ভাবে জানান, ঋতু ৫৯ নম্বর পেয়েছেন!
অনেকেই বলছেন, এ রাজ্যে তথ্য জানার অধিকার আইনের আবেদন করেও জবাব না-পাওয়ার এবং জবাব পেলেও তা ঠিক না-হওয়ার যে-সব অভিযোগ ওঠে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা সংক্রান্ত এই উত্তরই তার সত্যতা প্রমাণ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। মেধা-তালিকা প্রকাশিত হয় চলতি বছরের জুনে। সেই তালিকায় সর্বনিম্ন নম্বরের উল্লেখ না-থাকা, আসন-সংখ্যা কমে যাওয়া, মেধা-তালিকায় নাম না-থাকা এক প্রার্থীর নাম পরে সংযোজন করার মতো অভিযোগ তুলে অক্টোবরে হাইকোর্টে মামলা করেন ঋতু বেরা, আসরাফুন্নেশা-সহ কয়েক জন প্রার্থী।
আবেদনকারীদের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, তাঁর অন্যতম মক্কেল ঋতু বেরা সংস্কৃতের শিক্ষিকা হতে চেয়ে পরীক্ষায় বসেছিলেন। তিনি জুনে আরটিআই করেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল, তিনি ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছেন। ঋতু আরটিআই-এ এটাও জানিয়েছিলেন যে, তাঁর নাম মেধা-তালিকার ‘ওয়েটিং লিস্ট’-এ আছে।
আশিসবাবু জানান, বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ১১ অক্টোবর এসএসসি-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২ ডিসেম্বর হলফনামা দিতে হবে। কিন্তু তা জমা পড়েনি। ‘‘আরটিআইয়ের উত্তরের ব্যাপারে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করব,’’ বলেন আশিসবাবু।
এসএসসি-র চেয়ারপার্সন শর্মিলা মিত্র বলেন, ‘‘ওই প্রার্থী কোথা থেকে এ-সব নম্বর জেনেছেন, জানি না। আমি এমন কোনও চিঠি দেখিনি।’’