TOTO

টোটো নথিভুক্ত করার সময়সীমা ফের বৃদ্ধির পথে রাজ্য সরকার

পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টোটোর সঙ্গে গরিব সাধারণ মানুষের জীবিকার প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। তাই এ নিয়ে জোরাজুরি করে এমন কিছু করা হবে না, যাতে তাঁদের জীবিকার ক্ষতি হয়।’’

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:১১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

রাজ্যে টোটোর নথিভুক্তকরণ নিয়ে ‘ধীরে চলো’ অবস্থান নিতে চলেছে পরিবহণ দফতর। এক দফায় নথিভুক্তকরণের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর পরে ফের ওই সময়সীমা লম্বা মেয়াদে বাড়ানো হতে পারে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর।

রবিবার নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে মোটর ভেহিক‌্‌ল এনফোর্সমেন্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৬২তম সাধারণ সভায় পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টোটোর সঙ্গে গরিব সাধারণ মানুষের জীবিকার প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। তাই এ নিয়ে জোরাজুরি করে এমন কিছু করা হবে না, যাতে তাঁদের জীবিকার ক্ষতি হয়।’’ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ নিয়ে নরম অবস্থান নিতে চলেছে কিনা, এ দিন মন্ত্রীর মন্তব্যে সেই জল্পনা ছড়িয়েছে।

রাজ্যে বেআইনি টোটোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গত অক্টোবরে নথিভুক্তকরণের নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। ওই লক্ষ্যে নির্দিষ্ট টিটিইএন পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও শুরু করে সরকার। টোটোর ক্ষেত্রে প্রথম ছ’মাসের জন্য ১৬৪৫ টাকা খরচ করে নথিভুক্ত হলেই একটি অস্থায়ী নম্বর মিলবে বলে জানানো হয়েছিল। কলকাতার শহরতলি, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, বীরভূম, বাঁকুড়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুরের মতো বিভিন্ন জেলা এবং জেলার শহর এলাকা ধরে সরকারের আশা ছিল, অন্তত ১০ লক্ষ টোটো নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারি খাতায় নথিভুক্ত করা যাবে। যাত্রী-সুরক্ষার নিরিখে ওই সব ‘অনুমোদনহীন’ টোটোকে বছর দুয়েকের মধ্যে ধাপে ধাপে ই-রিকশায় উন্নীতও করা যাবে।

কিন্তু বাস্তবে ওই নথিভুক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরুর পরে এ নিয়ে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা খোঁজখবর করতে শুরু করেন। তার পরেই একাধিক সমস্যার কথা সামনে আসে। দেখা যায়, অনুমোদনহীন টোটোর জায়গায় নির্মাণ সংস্থার সরকারি ছাড়পত্র রয়েছে, এমন লক্ষ লক্ষ ই-রিকশা বিভিন্ন স্বীকৃত বিক্রেতাদের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে। অথচ সরকারি বাহন পোর্টালে ওই সব ই-রিকশার কোনও নথিভুক্তকরণ হয়নি। পথকর, বিমা, রেজিস্ট্রেশন খরচ— কোনও কিছু না দিয়েই ওই সব যান রাস্তায় নেমেছে। ওই সব যান বিক্রির পরে বহু বিক্রেতা দোকান তুলে দিয়েছেন, এমন নজিরও রয়েছে। কেউ কেউ সরকারি অনুমতি ছাড়াই ওই যান বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ। নতুন করে বাহন পোর্টালে ওই সব ই-রিকশার নথিভুক্তকরণ করতে গিয়ে পথকরের বিপুল বকেয়ার মুখে পড়তে হচ্ছে টোটোমালিকদের। অনেক স্বীকৃত বিক্রেতা পুরনো তারিখে নথিভুক্তকরণ করানোর জন্য ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন বলেও অভিযোগ। সমস্যা মেটাতে গত শুক্রবার পরিবহণ দফতরের ময়দান তাঁবুতে স্বীকৃত নির্মাতা সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন পরিবহণ মন্ত্রী। সেখানে সমস্যা সমাধানে ওই সব নির্মাতাদের ক্রেতাদের সাহায্য করার কথাও বলেন তিনি।

এ দিন মন্ত্রী জানান, প্রায় ৯০ হাজার টোটোর নথিভুক্তকরণ হয়েছে। জট ছাড়িয়ে সমস্যা মেটাতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার তাড়াহুড়ো করার পক্ষপাতী নয় বলেও জানান তিনি।

দফতর সূত্রের খবর, এ নিয়ে শীঘ্র সময়সীমা বৃদ্ধির নির্দেশ জারি হতে চলেছে। পরিবহণ দফতরের এনফোর্সমেন্ট বিভাগ চলতি অর্থবছরে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কর আদায় করার বিষয়ে আশাবাদী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন