চালক-গার্ডের মানবিকতায় চিকিৎসা জখমের

ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনের ধারে ছিটকে পড়েছিলেন এক জন। ট্রেন থামিয়ে চালক নেমে পড়েন। আসেন গার্ডও। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে মেলে আহতের সন্ধান। খবর দেওয়া হয় রেল পুলিশে। আনানো হয় অ্যাম্বুল্যান্স। চালক-গার্ডের তৎপরতায় মঙ্গলবার রাত ৭টা ৩৯ মিনিট নাগাদ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখার মৌড়িগ্রাম স্টেশনের কাছে আপ পাঁশকুড়া লোকালে ওই দুর্ঘটনায় আহত জাহির আব্বাস নামে ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করানো হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

নুরুল আবসার ও সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:২১
Share:

উলুবেড়িয়া স্টেশনে নামানো হচ্ছে আহত জাহির আব্বাসকে।—নিজস্ব চিত্র।

ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনের ধারে ছিটকে পড়েছিলেন এক জন।

Advertisement

ট্রেন থামিয়ে চালক নেমে পড়েন। আসেন গার্ডও। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে মেলে আহতের সন্ধান।

খবর দেওয়া হয় রেল পুলিশে। আনানো হয় অ্যাম্বুল্যান্স। চালক-গার্ডের তৎপরতায় মঙ্গলবার রাত ৭টা ৩৯ মিনিট নাগাদ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখার মৌড়িগ্রাম স্টেশনের কাছে আপ পাঁশকুড়া লোকালে ওই দুর্ঘটনায় আহত জাহির আব্বাস নামে ওই ব্যক্তিকে ভর্তি করানো হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

যা শুনে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছনো পর্যন্ত চালাক এবং গার্ড যা করেছেন, সব প্রশংসার যোগ্য।’’

আহতকে যে তাঁরা হাসপাতালে পৌঁছে দিতে পেরেছেন, এতেই খুশি ওই ট্রেনের চালক-গার্ড। চালক নারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘কেন যেন মনে হল, ওই ব্যক্তি বেঁচে রয়েছেন। ফলে, ট্রেন থামিয়ে গার্ডকে নিয়ে তাঁকে খুঁজতে নামি।’’ গার্ড এস মজুমদারও বলেন, ‘‘উদ্ধার করার সময়ে মানুষটা যে বেঁচে ছিলেন, এটাই বড় ব্যাপার।’’

ঠিক কী হয়েছিল এ দিন?

দক্ষিণ-পূর্ব রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনটি সাঁতরাগাছি স্টেশন থেকে রাত ৭টা ৩৯ মিনিটে মৌড়িগ্রামের কাছে আসে। চালক দেখেন, এক ব্যক্তি রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি ট্রেনটিকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও সফল হননি। ট্রেনটি ওই ব্যক্তিকে ধাক্কা মারে। তিনি রেললাইনের ধারে ছিটকে পড়েন। তখন চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। ওয়াকিটকিতে গার্ডকে ঘটনার কথা জানান। দু’জনেই কামরা থেকে নেমে পড়েন। দু’এক জন যাত্রীও নামেন। লাইনের ধারের জঙ্গলে জাহির আব্বাস নামে ডোমজুড়ের বাঁকড়ার বাসিন্দা ওই আহতের খোঁজ মেলে। তাঁর মাথায় চোট লাগে। তিনি নিজের নাম-ধাম চালক-গার্ডকে জানান। তাঁকে উদ্ধার করে গার্ডের কামরায় তোলা হয়।

ঘটনাস্থল থেকেই চালক উলুবেড়িয়া রেল পুলিশকে ফোনে ঘটনার কথা জানান। রেল পুলিশের পক্ষ থেকে চালককে জানানো হয়, উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে আহতকে ভর্তির ব্যবস্থা করানো হয়। ঘটনাটি জানানো হয় উলুবেড়িয়া স্টেশন ম্যানেজারকে। সাধারণত আপ ট্রেন আসে উলুবেড়িয়া স্টেশনের ২, ৩ বা ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। স্টেশন ম্যানেজার ট্রেনটিকে আনার ব্যবস্থা করেন ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে।

রাত ৮টা ৩৫ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি উলুবেড়িয়া স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে। স্ট্রেচার নিয়ে গার্ডের কামরার সাময়ে যায় পুলিশ। চালকও আসেন। আহত জাহির আব্বাসকে স্ট্রেচারে তুলে অ্যাম্বুল্যান্সে করে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। তখনও তাঁর মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। কথা বলতে পারছিলেন না। আহতকে হাসপাতালে পৌঁছনোর পরেই নিজেদের কেবিনে উঠে বসেন ট্রেনের চালক নারায়ণ চৌধুরী ও গার্ড এস মজুমদার। চোখে-মুখে স্বস্তির ছাপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন