উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকারকে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করা ঠিক হয়নি বলে রায় দিয়েছেন ৩ সদস্যের ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান সহ দু’জন। শনিবার ওই রায় দেওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে দিলীপবাবুকে কাজে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইবুনাল। কিন্তু, ট্রাইবুনালের আরেক সদস্য পৃথক রায়ে জানিয়ে দেন, দিলীপবাবুর শাস্তি পুনর্বিবেচনার আর্জি তিনি খারিজ করছেন। সেই সঙ্গে ট্রাইবুনালের রায়ের অংশ হিসেবে তা বিবেচ্য বলেও তিনি মত প্রকাশ করেছেন।
তবে ৩ সদস্যের ট্রাইবুনালে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায় মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিলীপবাবুকে স্বাগত জানাতে তৈরি হচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার-কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, ট্রাইবুনালের তৃতীয় সদস্যের পৃথক রায়ের বিষয়টিকে সামনে রেখে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিসার জানান, রায়ের প্রতিলিপি সরকারি ভাবে পেলে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। এই ব্যাপারে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘নির্দেশের প্রতিলিপি পেয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তা নিয়ে কথা বলব।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, পরীক্ষা নিয়ামক থাকাকালীন অপচয়ের অভিযোগে ২০১০ সালের মার্চ মাসে দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে মাটিগাড়া থানায় এফআইআর করেন তৎকালীন উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদার। দিলীপবাবুকে সাসপেন্ড করা হয়। দিলীপবাবু উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। বিষয়টি গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। সর্বোচ্চ আদালত দিলীপবাবুর বিষয়ে কর্মসমিতিকেই ‘যুক্তিগ্রাহ্য সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সিদ্ধান্ত অপছন্দ হলে উচ্চ স্তরে দিলীপবাবু আবেদন করতে পারবেন বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়।
২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কর্মসমিতি দিলীপবাবুকে বরখাস্ত করে। তিনি শাস্তি যথার্থ হয়নি জানিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপালের কাছে ট্রাইবুনাল গড়ে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান। ওই বছর নভেম্বরে ভাস্কর প্রসাদ বৈশ্যকে চেয়ারম্যান, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্যাম ডি নন্দনকে সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। এ দিন শ্যাম ডি নন্দন দিলীপবাবুর শাস্তি পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করেন। তৎকালীন উপাচার্য অরুনাভবাবু এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতেই রাজি হননি। ট্রাইবুনালের রায়ের কথা শুনে তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়গুলি এখন আর আমার জানার কথা নয়। আর সে সব মনেও নেই।’’
ট্রাইবুনালের রায়ের প্রসঙ্গে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘রায় না দেখে কিছু বলতে পারব না।’’ সিপিএম বিধায়ক তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও বিশদে জেনে মন্তব্য করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন।