দিঘার সৈকত-উৎসবে ‘খলনায়ক’ কুয়াশাই

 সৈকত-উৎসবের কথা শুনে বুধবারই সপরিবারে দিঘা এসেছিলেন দুর্গাপুর নিবাসী ব্যবসায়ী রতন চক্রবর্তী। শুক্রবার তিনি জানালেন, কুয়াশায় মাটি হচ্ছে উৎসবের আনন্দ। দিন কয়েকে জন্য বেড়াতে এসে তাই কিঞ্চিত হতাশ রতনবাবু।

Advertisement

শান্তনু বেরা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৮
Share:

দেরি: কুয়াশা কাটার পরে অবশেষে ছাড়তে চলেছে হেলিকপ্টার। দিঘায় শুক্রবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

সৈকত-উৎসবের কথা শুনে বুধবারই সপরিবারে দিঘা এসেছিলেন দুর্গাপুর নিবাসী ব্যবসায়ী রতন চক্রবর্তী। শুক্রবার তিনি জানালেন, কুয়াশায় মাটি হচ্ছে উৎসবের আনন্দ। দিন কয়েকে জন্য বেড়াতে এসে তাই কিঞ্চিত হতাশ রতনবাবু।

Advertisement

সৈকত উৎসবে প্রথম দিন থেকেই বাদ সাধছে কুয়াশা। বার বার পরিবর্তন হচ্ছে অনুষ্ঠানের সূচি। পর্যটকদের বক্তব্য, শীতের মরসুমে কুয়াশা হওয়াটাই স্বাভাবিক। তা নিয়ে উৎসবের উদ্যোক্তাদের পরিকল্পনার থাকা উচিত ছিল।

এ বারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ‘হট এয়ার বেলুন রাইড’ এবং হেলিকপ্টারে চড়ে সমুদ্র দর্শন। কুয়াশার কারণে ব্যাহত হয়েছে এই দুই কর্মসূচিই। নিউ দিঘার লারিকা মাঠে বসেছে বেলুন রাইডের আসর। বুধবার কুয়াশার জন্য কয়েক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয় রাইড। বৃহস্পতিবার সকালে আবার রাইডই হয়নি। রাইডের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার পক্ষে নির্মাল্য কুমার বলেন, “আগে ঠিক হয়েছিল, সকাল ৭টা থেকে ৯টা এবং দুপুর সাড়ে ৩টে থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রাইড হবে। কিন্তু কুয়াশার জন্য সকালে তা হচ্ছে না। শুধু দ্বিতীয় শিফটে হচ্ছে।” যদিও ১০ থেকে ১২ মিনিটের জন্য মাথাপিছু প্রায় ১৬০০ টাকার রাইডে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন না পর্যটকেরা। নির্মাল্যবাবুর আশা, বড়দিনের ছুটিতে ভিড় বাড়লে রাইডের জনপ্রিয়তাও বাড়বে। অন্য দিকে, প্রতি দিন সকাল ১১টা থেকে চালু হওয়ার কথা হেলিকপ্টার পরিষেবা। দিঘা হেলিপ্যাডের টিকিট কাউন্টারের কর্মী অভিষেক জানা বলেন, “সকালের দিকে কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কম থাকছে। তাই এই ‘কপ্টার জয় রাইড’-এর সময় খানিকটা বদল করতে হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, ২০ মিনিটের রাইডের খরচ মাথাপিছু ২ হাজার টাকা। দিনে ৪ বার করে ৫ জনকে নিয়ে হেলিকপ্টার উড়ছে, রাইডের সুযোগ পাচ্ছেন মোট ২০ জন। এক ঘণ্টা অন্তর ওড়ার কথা থাকলেও কুয়াশার কারণে সময়ের বদল হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও কুয়াশার জন্য পিছিয়ে গিয়েছিল শঙ্খবাদন কর্মসূচিও।

Advertisement

এ ছাড়াও উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ থাকার জায়গা সুইস টেন্টের বেশ কিছু খালি পড়ে রয়েছে এখনও। দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উল্টো দিকে ৩০টি সুদৃশ্য ও সুসজ্জিত তাঁবু এসেছে রাজস্থান থেকে। উৎসবের তিন পেরিয়ে গেলেও টেন্টগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। অথচ দিঘার অধিকাংশ হোটেলেই ঘর মিলছে না। মুর্শিদাবাদ থেকে আসা সাজিদ মল্লিক বলেন, “টেন্টে থাকতে খরচ হবে দিনে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। যা আমাদের মতো পর্যটকদের পক্ষে খুব বেশি। খোলা মাঠে তাঁবু বসেছে। খুব কুয়াশা হচ্ছে। এত ভাড়া দিয়ে কুয়াশা আর ঠান্ডার মধ্যে টেন্টে থাকা বিলাসিতা।”

এতেই হতাশ পর্যটকেরা। তাঁদের প্রশ্ন, শীতে কুয়াশা হবে এ তো জানা কথা। তা হলে কুয়াশার কারণে ব্যাহত হতে পারে এমন প্রধান প্রধান কর্মসূচি কেন সকালে রাখা হল? নদিয়া থেকে আসা সুময় পালের কথায়, “উদ্যোক্তারা কি কুয়াশার কথা জানতেন না?” জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, “কুয়াশা প্রাকৃতিক ব্যাপার। এর উপরে আমাদের হাত নেই। কবে কুয়াশা হবে, কবে হবে না, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না। এটা মেনে নিতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন