আহত স্বপন নিয়োগী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
শাসক দলের বিরুদ্ধে শিক্ষক বা পুলিশ পেটানোর অভিযোগ আগেই ছিল। এ বার তার সঙ্গে যুক্ত হল সংবাদমাধ্যামের প্রতিনিধির উপর হামলার ঘটনাও। অভিযোগ, সোমবার রাতে বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় তৃণমূলের যুবনেতা সৌমেন মাজি তার দলবল নিয়ে এবিপি আনন্দের সাংবাদিককে মারধর করে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত নেতা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার তাদের আদালতে তোলা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঠিক কী হয়েছিল রবিবার?
পুলিশও স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার তালড্যাংরায় একটি সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটির মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন ছিল। অভিযোগ, তালড্যাংরা ব্লকের যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সৌমেন মাজি সেখানে গিয়ে বিরোধীদের মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেয়। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন এবিপি আনন্দের সাংবাদিক স্বপন নিয়োগী। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে দেখে তখনকার মতো সেখান থেকে সরে পড়ে সৌমেন। পরের দিন রাত সওয়া ১০টা নাগাদ ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় সৌমেন তাঁর দলবল নিয়ে হামলা চালায় বলে দাবি স্বপনবাবুর। অভিযোগ, মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে স্বপনবাবুকে ভোজালির কোপ মারা হয়। পর রড দিয়ে তাঁর বাঁ-হাত ভেঙে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে সেখান থেকে চম্পট দেয় সৌমেনরা। এর পর গুরুতর আহত স্বপনবাবুকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হামলার ফলে তাঁর কোমর, বাঁ-হাত ও ডান পায়ে গুরুতর চোট লেগেছে।
এ দিন স্বপনবাবু বলেন, “পরিকল্পনা করেই আমাকে খুনের উদ্দেশ্যে এসেছিল ওরা। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই।”
অভিযুক্ত সৌমেন মাজি-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে তালড্যাংরা থানার পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ ছ’টি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
ঘটনায় পর সরব হয়েছে বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপি-র সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার বলেন, “বাঁকুড়ায় সাংবাদিককে ফোনে হুমকি দেওয়া তো হতোই। এখন মারধর শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার তো মনে হয় খুনই করে ফেলবে।”
ঘটনায় পর শাসক দলের হয়ে মুখ খুলেছেন যুব তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি শিবাজী সরকার। তিনি বলেন, “বিষয়টি রাজ্যে নেতৃত্বকে জানিয়েছি। সৌমেনের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ করা হবে তা শীঘ্রই জানা যাবে।”