খাগড়াগড়-কাণ্ডে দুই অভিযুক্ত ধৃত

তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘‘ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এখনও পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই বিস্ফোরণে কদর ও সাজ্জাদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। জেরার প্রয়োজনে ধৃতদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৩
Share:

কাজ শেষে টিভি-মোবাইল ফোন দেখার নেশা নেই। মোবাইল ব্যবহার করত কালেভদ্রে। বেশ চুপচাপই থাকত দুই ‘রাজমিস্ত্রি’।

Advertisement

পর্যটক সেজে বেশ কয়েক দিন ঘোরাঘুরির পর সোমবার রাতে হুগলির আরামবাগ থেকে সেই দু’জনকে গ্রেফতার করলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা —এনআইএ’র গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, ধৃত কদর কাজি (কাদুর) এবং সাজ্জাদ আলি বর্ধমানে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত ছিল এবং দু’জনেই জামাত-উল মুজাহিদিন (বাংলাদেশ)-এর সক্রিয় সদস্য। কদর ওই বিস্ফোরণের মূল চক্রী জহিদুল ইসলাম ওরফে কওসরের শ্যালক। মঙ্গলবার ধৃতদের এনআইএ বিশেষ আদালতে তোলা হলে বিচারক দু’জনকেই ১৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে।

তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘‘ওই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। এখনও পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই বিস্ফোরণে কদর ও সাজ্জাদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। জেরার প্রয়োজনে ধৃতদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

এক গোয়েন্দা কর্তা জানান, ২০১৪ সালের অক্টোবরে খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পরে ধৃতেরা উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিল। তারা মূলত সংগঠনের ‘বম্ব স্কোয়াড’-এর চাঁই। বোমা তৈরির প্রশিক্ষণও দিত। গোয়েন্দাদের দাবি, তাদের কাছ থেকে ‘টাইমার’-সহ বোমা তৈরির আরও কয়েকটি যন্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মাস দেড়েক আগে কাদের আরামবাগে এসে এক ঠিকাদারের অধীনে রাজমিস্ত্রির কাজে ঢুকেছিল। সাজ্জাদ আসে দিন পনেরো আগে।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কদর ও সাজ্জাদ গোপনে জামাত-উল মুজাহিদিনের মাথাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। গত দেড় বছর ধরে নজরে রাখার পর সেই ‘যোগাযোগে’র সূত্রে তাদের ধরেন গোয়েন্দারা। তাঁরা জানতে পারেন, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে ‘ডার্ক ওয়েব’ (যে সাইট কোনও সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজে পাওয়া যাবে না) ব্যবহার করেছিল কদরেরা। তা যাতে কোনও ভাবে গোয়েন্দাদের নজরে না আসে, তার জন্য তারা ব্যবহার করছিল ‘ডার্ক নেট’। এই ‘অন্ধকার আন্তর্জাল’ই তাদের মোবাইলে যাবতীয় কার্যকলাপ গোপন রাখতে সাহায্য করছিল। বিশেষ ধরনের ‘টেক্সটিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করায় তাদের বার্তা কারও পক্ষে দেখা সম্ভব ছিল না। আর এই সামগ্রিক গোপন কার্যকলাপ নজরদারির আড়ালে রাখতে অভিযুক্তেরা
ব্যবহার করত বিশেষ একটি অ্যাপ—‘ওনিয়ন রাউটার’।

তা হলে কী ভাবে কদরদের সন্ধান পেল এনআইএ? সাধারণত, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা স্থানীয় সোর্স মারফত কোনও সন্দেহভাজনের কথা জানতে পারলে ওই এলাকার ‘আইপি অ্যাড্রেস’ সার্চ করে। এ ভাবেই এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ ভারতের একটি এলাকায় বিদেশের আইপি অ্যাড্রেসের সন্ধান পায় তারা। সেই সূত্র ধরে নিজস্ব অ্যাপের মাধ্যমে ‘অন্ধকার আন্তর্জাল’ ভেদ করা সম্ভব হয়। গোয়েন্দারা সন্ধান পান বিশেষ ‘টেক্সটিং’ পদ্ধতির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement