ইটভাটার জ্বলন্ত চুল্লিতে পড়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেল দুই শিশুকন্যা। রবিবার সকালে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে হুগলির পাণ্ডুয়ায় টি বি় ডব্লিউ ইটভাটায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুরা সম্পর্কে মাসতুতো-পিসতুতো বোন। বছর দশেকের শিশুটির নাম স্বপ্না রাজবংশী ও অন্য জন বছর দুয়েকের চাঁদনী রাজবংশী।
আরও পড়ুন
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, স্বপ্নার বাবাও ওই ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন। গত ২০০৯ সালে এই ইটভাটাতেই কাজ করার সময় দুর্ঘটনায় কবলে পড়ে মারা যান তিনি। চাঁদনীর বাবা উদয় রাজবংশী ওই ইটভাটার অস্থায়ী শ্রমিক। আদতে বিহারের নওয়াদার সীতামারির বাসিন্দা উদয় তাঁর পরিবার নিয়ে ইটভাটাতেই বাস করত।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ চাঁদনীকে কোলে নিয়ে ইটভাটাতে মামা উদয়কে ডাকতে যায় স্বপ্নার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইটভাটার চুল্লির কাছেই কাজ করছিলেন উদয়। দূর থেকে তাঁর মেয়েকে নিয়ে স্বপ্নাকে আসতে দেখেন তিনি। প্লাস্টিকের ঢাকনা দিয়ে ইটভাটার চুল্লি ঢাকা দেওয়া ছিল। নিজের মামাকে দেখতে পেয়ে ওই ঢাকনার উপর পা দেওয়ামাত্রই তা গলে জ্বলন্ত চুল্লির মধ্যে পড়ে যায় ওই দু’জন। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে উঠেন উদয়। উদয়ের চিৎকারে ঘটনাস্থলে জড়ো হন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাঁশ দিয়ে দু’জনকে উপরে টেনে তোলার চেষ্টাও করেন তাঁরা। খবর পেয়ে ইটভায়ায় এসে পৌঁছয় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। শেষমেশ ওই দু’জনকে টেনে তোলা হয়। কিন্তু, চুল্লির আগুনে তত ক্ষণে তা তালগোল পাকানো মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে।
ওই দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ইটভাটার মালিক। এ দিন দুর্ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইটভাটার অফিসে ভাঙচুরও চালায় তারা। অতিরিক্ত পুলিস সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “শিশুদের পরিবারের তরফে এখনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে পুলিশ এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”
ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।