ধরা পড়েও বর্ধমানে জামিন শিক্ষাবন্ধু সমিতির ২ নেতার

আলো নিভিয়ে পেরেক বসানো কাঠ, লাঠি দিয়ে অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের উপরে হামলায় নাম জড়িয়েছিল তাঁদের। হামলার নিন্দা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রীও। অবশেষে পড়ুয়াদের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করল ওই হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের দুই নেতাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ০৩:৪৯
Share:

আলো নিভিয়ে পেরেক বসানো কাঠ, লাঠি দিয়ে অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের উপরে হামলায় নাম জড়িয়েছিল তাঁদের। হামলার নিন্দা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রীও। অবশেষে পড়ুয়াদের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করল ওই হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের দুই নেতাকে। বিধানসভা ভোটের আগে যা দলের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা বলে জানা যাচ্ছে তৃণমূল সূত্রেই। তবে, সোমবার রাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে মঙ্গলবারই জামিন পেয়েছেন দু’জনে।

Advertisement

শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি ক্যাম্পাসে ওই গোলমাল হয়েছিল। পার্ট-৩ পরীক্ষা পিছনোর দাবিতে কিছু পড়ুয়া অনশনে বসেছিলেন। তখনই হামলা হয়। একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সীতারাম মুখোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে রয়েছেন। মুখে রুমাল বাঁধা অবস্থায় দেখা গিয়েছিল সমিতির নেতা অংশুমান গোস্বামীকেও। দু’জনেই অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। আন্দোলনকারীদের তরফে সোমবার রাতে বর্ধমান থানায় এফআইআর করা হয়। লিখিত অভিযোগে দাবি করা হয়, কর্তৃপক্ষের মদতে এবং উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের সম্মতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী সংগঠন ও বহিরাগত দুষ্কৃতীরা ছাত্রছাত্রীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ছাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করেছে। গুন্ডাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন সীতারামবাবু ও অংশুমানবাবু। এর পরেই দু’জনকে ধরা হয়। গ্রেফতার হন মঙ্গলা রায় নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক কর্মীকেও। তাঁকে পেরেক মারা কাঠের টুকরো হাতে দেখা গিয়েছিল ঘটনার দিন। মঙ্গলবার তিন জনকেই বর্ধমান সিজেএম আদালতে তোলা হলে তাঁদের জামিন মঞ্জুর হয়।

গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন জামিন হল দু’জনের? সরকারি আইনজীবী চন্দ্রনাথ গোস্বামীর দাবি, তিনি জামিনের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু, এফআইআরে কিছু গোলমাল থাকায় অভিযুক্তদের জামিন পেতে সুবিধা হয়েছে।

Advertisement

জামিন পেয়ে শিক্ষাবন্ধু সমিতির দুই নেতা কথা বলতে চাননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারও বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক ব্যাপার। এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ কিন্তু, ঘটনা হল, সীতারামবাবুর কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল প্রভাবিত আর একটি কর্মচারী সংগঠন। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ ওই সংগঠনের বর্ধমান শাখার নেতা শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘দল যে অন্যায় কাজে সমর্থন করে না, তা এই গ্রেফতারিতেই প্রমাণিত হল।’’

এ দিনই পড়ুয়াদের উপর মারধর, লাঠি চালানোর প্রতিবাদে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে এ দিন মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বুটা ও বিদ্বজ্জনেদের একাংশ।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সময়মতো পরীক্ষার ফল বের করার কথা বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্রেরা ছাত্রসুলভ ব্যবহার করবে, এটাই কাম্য। অছাত্রসুলভ ব্যবহার যারা করে তারা ছাত্র হতে পারে না। তারা বহিরাগত হতে পারে। তারা পড়াশোনা ছাড়া সবই করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন