বহু বছর পরে ভাগ্নে দিলীপের বাড়িতে হঠাৎ হাজির মামা দিলীপ

বহু বছর পরে ভাই এসেছে ঘরে। তড়িঘড়ি ঝাঁটা নামিয়ে রেখে, ঘটির জলে হাত ধুয়ে অতিথিদের দিকে এগিয়ে গেলেন পুষ্পলতা। সত্তরোর্ধ্ব পুষ্পলতা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মা। আর শুক্রবার সাতসকালে তাঁর বাড়িতে এসে যিনি দিদি বলে সম্বোধন করলেন, তাঁর নামও দিলীপ ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলিয়াবেড়া শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৮
Share:

পুষ্পলতার সঙ্গে তৃণমূলের দিলীপ। নিজস্ব চিত্র

ঘুম থেকে উঠে টুকটাক কাজ সেরে উঠোনে ঝাঁট দিচ্ছিলেন পুষ্পলতা ঘোষ। হঠাৎ হাজির কয়েকজন। তাঁদেরই মধ্যে একজন বলে উঠলেন, ‘‘দিদি গো কেমন আছো?’’

Advertisement

বহু বছর পরে ভাই এসেছে ঘরে। তড়িঘড়ি ঝাঁটা নামিয়ে রেখে, ঘটির জলে হাত ধুয়ে অতিথিদের দিকে এগিয়ে গেলেন পুষ্পলতা। সত্তরোর্ধ্ব পুষ্পলতা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মা। আর শুক্রবার সাতসকালে তাঁর বাড়িতে এসে যিনি দিদি বলে সম্বোধন করলেন, তাঁর নামও দিলীপ ঘোষ। তিনি তৃণমূলের দিলীপ। দুই দিলীপের সম্পর্ক বেশ দূরের। বিজেপির দিলীপ ব্যস্ত রাজনীতিক। তাই তাঁর সঙ্গে দেখা সাক্ষাতের সুযোগ তেমন হয় না। তবে সামাজিক অনুষ্ঠানে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে তৃণমূলের দিলীপের সঙ্গে দেখা হয় পুষ্পলতা বা তাঁর ছোট ছেলে হীরকের। শেষ কবে কুলিয়ানা গ্রামে পুষ্পলতার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তৃণমূলের দিলীপ? কিছুক্ষণ সময় নিয়ে হীরক বললেন, ‘‘ঠিক মনে করতে পারছি না। এটুকু বলতে পারি বহু বহু বছর পরে এলেন তিনি।’’

বহু বছর পর আত্মীয়ের বাড়িতে আবির্ভাবের নেপথ্যে রয়েছে রাজনীতি। ভোট কুশলী প্রশান্ত কুমার (পি কে) তৃণমূলের দিলীপকেই কুলিয়ানা গ্রামে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির মুখ করেছে। বৃহস্পতিবার কুলিয়ানা গ্রামে মিছিলে এসে দিলীপ জানিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতির বাড়িতে যাবেন তিনি। যা শুনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন, ‘‘চোরেদের সঙ্গে থেকে যে পাপ করেছেন আমাদের বাড়িতে গেলে সেই পাপক্ষালন হয়ে যাবে। যাক, আমার মায়ের আশীবার্দ নিয়ে আসুক।’’ পাল্টা কোনও মন্তব্য করেননি। তবে কথা মতো পুষ্পলতার আশীর্বাদ নিতে পৌঁছেছিলেন তৃণমূলের দিলীপ। আপ্যায়নে ত্রুটি রাখেননি পুষ্পলতা। চেয়ার নিয়ে এসে বসতে দিয়েছেন দাওয়ায়। দিয়েছেন চা, বিস্কুটও। আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ খবর নিয়ে বেলিয়াবেড়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি টিঙ্কু পাল ও পাঁচজন কর্মীকে নিয়ে ফেরেন তৃণমূলের দিলীপ। যাওয়ার আগে বলে যান, ‘‘পারিবারিক কথাবার্তাই হয়েছে। পুষ্পদিদি এলাকার কোনও সমস্যা নিয়ে কিছু বলেননি।’’ আর হীরকের কথায়, ‘‘তৃণমূলের নেতা হলেও উনি আমাদের দিলীপ মামা। পারিবারিক সম্পর্ক নিবিড়। এলাকার সমস্যা আমরা তাঁকে কিছু জানাইনি। গ্রামবাসীরা সমস্যার কথা জানিয়েছেন।’’

Advertisement

সম্পর্ক দূরের। ত়ৃণমূলের দিলীপ খোলসা করলেন সে সম্পর্ক। বলেন, ‘‘আমার জামাইবাবুর বোন হলেন পুষ্পলতাদি। আমি ওঁকে দিদি ডাকি। সেই অর্থে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি আমার ভাগ্নে।’’ দুই দিলীপের সম্পর্ক মামা-ভাগ্নের। জন, জামাই, ভাগনা, এ তিন কি কখনও হয় আপনা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন