বিধায়ক পদ ছাড়লেন উদয়ন, কারণ নিয়ে কটাক্ষ অক্ষয়দের

অবশেষে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন উদয়ন গুহ। শনিবার বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তিনি তাঁর পদত্যাগ পত্র তুলে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৬ ০২:০৮
Share:

অবশেষে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন উদয়ন গুহ। শনিবার বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তিনি তাঁর পদত্যাগ পত্র তুলে দেন।

Advertisement

গত বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্ট তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে জিতে দিনহাটার বিধায়ক নির্বাচিত হন উদয়নবাবু। ৩১ অক্টোবর তিনি দলত্যাগ করে শাসক দল তৃণমূলে যোগ দেন। এবারে তৃণমূলের টিকিটে দিনহাটা থেকে লড়াইয়ে নেমেছেন। উদয়নবাবু বলেন, “গতবার ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে জয়ী হয়েছিলাম। এবারে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছি। তাই ওই দলের হয়ে আর বিধায়ক থাকা ঠিক নয় বলে মনে করি। তাই পদত্যাগ করলাম।” তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রায় ছয় মাস হতে চলেছে উদয়নবাবুর। এতদিন পরে কেন পদত্যাগ? তাঁর দাবি, “আগে পদত্যাগ করলে দিনহাটা বিধায়ক হারাত। এলাকার পরিষেবা ও উন্নয়ন নিয়ে বিধায়কের অনেক কাজ থাকে। মানুষ যাতে সেসব থেকে বঞ্চিত না হন তাই এই সময়টাকে বেছে নিয়েছি।”

তাঁর পুরনো দল ফরওয়ার্ড ব্লক অবশ্য উদয়নবাবুর যুক্তি হাস্যকর বলে দাবি করেছেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা এবারে উদয়নবাবুর বিরুদ্ধে দিনহাটা কেন্দ্রে দাঁড়ানো বাম জোটের প্রার্থী অক্ষয় ঠাকুর বলেন, “আসলে উদয়নবাবু ব্যবসায়ী মানুষ। সব সময় হিসেব-নিকেষ করেন। কখন দলত্যাগ করতে হবে আর কখন পদত্যাগ করতে হবে সব ভাল বোঝেন। ওই সময় পদত্যাগ করলে বিধায়ক পেনশন নিয়ে একটু অসুবিধেয় পড়তেন। এখন আর পড়বেন না।”

Advertisement

সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় অভিযোগ তুলেছেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করতে উদয়নবাবু ওই পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “যে দিন উদয়নবাবু দলত্যাগ করেছিলেন সে দিন যদি বিধায়ক পদ ছাড়তেন তাহলে তাঁর মুখে নীতির কথা কিছুটা মানাত। আসলে তিনি মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চান।” যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক আব্দুর রউফ কটাক্ষ করে জানান, আগে পদত্যাগ করলে উদয়নবাবু অসুবিধেয় পড়তেন। বিধায়কের সুযোগ-সুবিধে পেতেন না।

শুধু বামেরাই নয়, বিজেপি ও কংগ্রেসও উদয়নবাবুর ওই সিদ্ধান্তের পিছনে ভোট রাজনীতির খেলা রয়েছে বলে দাবি করেন। বিজেপির কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “যেখানে যাচ্ছেন মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। কোনও উত্তর উদয়নবাবুর কাছে নেই। বিধায়ক হয়েও তিনি এলাকার জন্য কিছু করতে পারেননি। তাই এখন তিনি কতটা আদর্শবাদী তা প্রমাণ করতে আসরে নেমেছেন।” কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সম্পাদক শ্যামল চৌধুরী বলেন, “উদয়নবাবুর যা করেছেন তাতে তিনি তাঁর গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। এখন পদত্যাগ করার মানে হয় না।”

দলীয় সূত্রের খবর, উদয়নবাবুব দলত্যাগ করার পর থেকেই তাঁকে নীতিহীন বলে আখ্যা দিয়ে প্রচারে নামে তাঁর পুরনো দল ফরওয়ার্ড ব্লক। সভা থেকে শুরু মিছিলে উদয়নবাবুর বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগও দাবি করেন তাঁরা। বিধানসভা ভোটেও তা নিয়ে প্রচার শুরু করেছেন বিরোধীরা। উদয়নবাবু অবশ্য তা খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বিরোধীদের অভিযোগ গুরুত্বহীন। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে উদয়নবাবু পদত্যাগ করেছেন। যেহেতু গতবার তিনি অন্য দলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন, তাই পদত্যাগ করতেই হত। সেটাই করেছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন