কর্মমুখী পাঠ্যক্রমের নির্দেশ দিল ইউজিসি

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমকে কর্মসংস্থানমুখী করে তোলার উপর গুরুত্ব দিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সম্প্রতি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে এই বিষয়ে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তিন বছরে অন্তত এক বার পাঠ্যক্রম পরিমার্জন করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমকে কর্মসংস্থানমুখী করে তোলার উপর গুরুত্ব দিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সম্প্রতি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে এই বিষয়ে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তিন বছরে অন্তত এক বার পাঠ্যক্রম পরিমার্জন করতে হবে।

Advertisement

ইউজিসি-নির্দেশ আসার আগেই অবশ্য এই রাজ্যে সরকারি উদ্যোগে বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকস্তরের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হয়েছে। পড়ুয়ারা যাতে পাশ করে বেরিয়েই চাকরির সুযোগ পেতে পারেন, সে দিকে নজর রেখেই পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রম তৈরির ক্ষেত্রে একটি নামি উপদেষ্টা সংস্থার পরামর্শও নেওয়া হয়েছে। এবং আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্নাতকস্তরে নতুন পাঠ্যক্রম চালুর চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পার্থবাবু।

ইউজিসি-র নির্দেশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রম পরিবর্তন ও পরিমার্জনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়। বলা হয়, দেশ-বিদেশের বাজারের চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় রেখে পাঠ্যক্রম তৈরি করতে হবে। এতে যেমন দেশের বেকারত্বে কিছুটা লাগাম পরানো যাবে, তেমনই চাকরি-প্রত্যাশীদের চাহিদাও মিটবে। সেই কারণে উপাচার্যদের কাছে পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

নয়া নির্দেশিকা নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ শনিবার জানান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রতি দু’-তিন বছর অন্তরই পাঠ্যক্রম বদলানো হয়। সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের দক্ষতা বাড়ানোয় বিশেষ নজর দেওয়ার পাশাপাশি চাকরির বাজার কেমন রয়েছে, তা মাথায় রেখে পাঠ্যক্রম ঠিক করা হয়। তবে সাহিত্য ও ভাষার ক্ষেত্রে এই রকম পাঠ্যক্রম তৈরি করা কঠিন বলে তাঁর মত। উপাচার্যের কথায়, ‘‘ইউজিসি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। কিন্তু মনে রাখা দরকার কোনও পড়ুয়া যদি জানতে চান আকবর, শেক্সপিয়র, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখার সঙ্গে পেশাদারিত্বের কী সম্পর্ক? তার উত্তর আমাদের কাছে নেই। কারণ, এই সমস্ত লেখা দক্ষতা বাড়তে সাহায্য করতে পারে, পেশাদার হতে নয়।’’

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষার পাঠ্যক্রম অবশ্যই কর্মমুখী হবে, এতে দ্বিমত নেই। কিন্তু তার সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে উচ্চশিক্ষার শুধু একটিই উদ্দেশ্য থাকতে পারে না। সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে প্রত্যেক পড়ুয়াকে সুস্থ ও চিন্তাশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন। এবং সে ভাবেই আমরা চেষ্টা করি।’’

সিধু কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপককুমার মণ্ডলও আশুতোষবাবুর সঙ্গে একমত। বিশেষ কয়েকটি বিষয় ছাড়া সব কিছুই পেশাদার মনোভাব নিয়ে করা যায় না বলে মনে করেন তিনি। দীপকবাবু অবশ্য স্বীকার করেছেন, এ রাজ্যে স্নাতকস্তরের পাঠ্যক্রমে সে ভাবে নজর দেওয়া হয়নি।

বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরীর মত, ‘‘চাকরিমুখী আধুনিক পাঠ্যক্রমের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব স্টাডিজে বণিকসভা এবং শিল্পক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের থাকা দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন