মুখোমুখি: নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা। সোমবার দাড়িভিটে। নিজস্ব চিত্র
সর্বদল বৈঠকে স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটল দাড়িভিটে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সোমবার ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল নিহতদের দুই পরিবারকেও। কিন্তু আলোচনার মাঝেই স্কুল বন্ধ নিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে বৈঠক ছেড়ে উঠে যান নিহতদের পরিবারের দুই সদস্য। পরে তাঁরা ফের বৈঠকে ফিরে এসে স্কুল খোলার ব্যাপারে সম্মতি দেন।
ইসলামপুরের মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘দাড়িভিট স্কুলে তালা ঝুলিয়েছিলেন নিহত পরিবারের লোকজন। সর্বদল বৈঠকের মাঝে নিহতদের পরিবারের লোকেদেরও ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেই আলোচনা হয়। নিহতদের পরিবারের লোকেরা স্কুল খোলার জন্য মত দেন।’’ স্কুলের সঙ্গে প্রায় ১৯০০ ছাত্রের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে। ভবিষ্যতে এইভাবে স্কুল বন্ধ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। দাড়িভিট-কাণ্ডে নিহত রাজেশ সরকারের বাবা নীলকমল এবং তাপস বর্মণের বাবা বাদল জানান, প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মহকুমাশাসকের তরফে নিহতদের পরিবারকে জানানো হয়, তাঁদের দাবির বিষয়গুলি বিচারাধীন। স্কুলের যে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তাও তদন্ত করে দেখা হবে। ইতিমধ্যেই শিক্ষা দফতরে তা জানানো হয়েছে। তা শুনে নীলকমল ও বাদল বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান। কিছু ক্ষণ পরেই বৈঠকে ঢুকে তাঁরা স্কুল খোলার পক্ষে মত দেন। তার পরেই এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ খোলে দাড়িভিট স্কুল। মঙ্গলবার থেকে স্বাভাবিক ভাবে স্কুল চলবে বলেই প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে এ দিন স্কুলে তালা ঝোলানো থাকলেও কোনও পরীক্ষা ছিল না।
স্কুল খোলার নির্ধারিত সময়ে সেখানে যান জেলার ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতি এবং দফতরের অন্যান্যরা। স্কুলে মাঠে আসেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। স্কুল খোলার কথা বলতে গিয়েই ক্ষোভের মুখের পড়তে হয় তাঁদের। নিহত তাপসের মা মঞ্জুদেবী, রাজেশের বাবাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘প্রশাসন আমাদের দাবি পূরণ করেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আসুন। তাঁর কাছেই অভিযোগ জানাব।’’
বিজেপির জেলার সহকারী সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘স্কুল বন্ধ রেখে আন্দোলন করার পক্ষপাতী নই আমরাও। প্রশাসন দাবি পূরণে ব্যর্থ বলেই নিহতদের পরিবার কথা শুনতে চাইছিলেন না। ওঁদের হাত জোড় করেই অনুরোধ করেছি। পরে বিষয়টি তাঁরা বুঝেছেন।’’