প্রতিবাদের পরোক্ষ প্রভাবে বিপাকে পরীক্ষার্থীরা, ফল ঘোষণাও

সমস্যা শুধু স্কুল স্তরেই নয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন কলেজে চলছে স্নাতক স্তরের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পরোক্ষ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে শিক্ষাঙ্গনেও। বিশেষত স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত পরীক্ষা ও পরীক্ষার ফল ঘোষণা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা। বাংলা শিক্ষা ই-পোর্টালে স্কুলপড়ুয়াদের বার্ষিক পরীক্ষার নম্বর আপলোড করার কাজ শুরু করেছেন শিক্ষকেরা। অভিযোগ, সার্ভার ডাউন থাকায় এমনিতেই এই কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। তার মধ্যে আবার রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য কয়েকটি জেলায় রাজ্য সরকারের তরফে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সময়মতো বার্ষিক পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা যাবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

Advertisement

সমস্যা শুধু স্কুল স্তরেই নয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন কলেজে চলছে স্নাতক স্তরের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে ২০ ডিসেম্বর। চলছে স্নাতকোত্তরের তৃতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষাও। আজ, সোমবারেও বিভিন্ন কলেজে পরীক্ষা আছে। যাঁরা ট্রেনে আসেন, তাঁদের এবং অভিভাবকদের চিন্তা, এই অশান্ত পরিবেশের মধ্যে তাঁরা কী ভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছবেন? কোনও কোনও পরীক্ষার্থী আগেভাগে পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছে হোটেলে বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে উঠছেন। কিন্তু সকলের সেই সুযোগ নেই। মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র কলেজের শিক্ষক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘আমাদের কলেজে বিএ এবং বিএসসি-র প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেকে পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড নিতে আসতে পারছেন না।’’

২০ ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বার্ষিক পরীক্ষার নম্বর ই-পোর্টালে আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। তার কয়েক দিনের মধ্যেই পরীক্ষার ফল বেরোনোর কথা। সেই অনুযায়ী স্কুলগুলিতে নম্বর আপলোডের কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ডেঙ্গির সঙ্গী অন্য রোগ, চিকিৎসায় নতুন নির্দেশিকা

মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দির সহকারী প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানান, অশান্ত পরিবেশের জন্য অন্যান্য জেলার পাশাপাশি তাঁদের জেলাতেও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তে খুবই অসুবিধা হবে। ‘‘এমনিতেই সার্ভার ডাউন থাকে। তার উপরে ইন্টারনেট পরিষেবা টানা কয়েক দিন বন্ধ থাকলে ই-পোর্টালে কোনও কাজই হবে না,’’ বলেন দীপঙ্করবাবু। হাওড়ার একটি স্কুলের এক শিক্ষক জানান, স্কুলের সময়ে অর্থাৎ ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ই-পোর্টালের সার্ভার মাঝেমধ্যেই ডাউন থাকে। বাড়িতে গিয়ে রাতে নম্বর আপলোড করার কাজ করতে হচ্ছিল। সময়মতো ফল ঘোষণার তাগিদে তাঁরা মাঝরাত পর্যন্ত জেগে সেই কাজ করছিলেন। কিন্তু এখন তাঁদের জেলায় পুরোপুরি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেলে বাড়িতে বসেও তাঁরা সেই কাজ করতে পারবেন না।

শিক্ষক সংগঠনগুলিও চিন্তিত। বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা জানান, কত দ্রুত রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তাঁরা সে-দিকেই তাকিয়ে আছেন। কারণ, স্কুলের ফলাফল বেরোতে দেরি হলে আগামী শিক্ষাবর্ষে নতুন ক্লাসে ভর্তি থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের বই বিতরণ পর্যন্ত অনেক কাজেই দেরি হয়ে যেতে পারে। এর ফলে আখেরে ক্ষতি হবে পড়ুয়াদেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন