বর্ষণে নষ্ট আলু থেকে আনাজ, লাভ ধানের

প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। আনাজের জোগান তো কমছেই। তার জেরেই দাম বাড়তে শুরু করেছে বহু কৃষিপণ্যের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফাল্গুনে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কোনও কোনও চাষির মুখে হাসি ফুটেছে, মেঘ ঘনিয়েছে অনেক চাষির মুখে। মাঠে জল পেয়ে লাভ হয়েছে বোরো ধান চাষিদের। কিন্তু ক্ষতির মুখে পড়েছেন আলু, পেঁয়াজ-সহ আনাজ চাষিরা। অধিকাংশ জেলাতেই বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় ফসল নষ্ট হয়েছে। তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। আনাজের জোগান তো কমছেই। তার জেরেই দাম বাড়তে শুরু করেছে বহু কৃষিপণ্যের।

Advertisement

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিজ্ঞানী কৌশিক ব্রহ্মচারী জানান, এই বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হবে আলুচাষিদের। আলু তোলার মুখে মাঠে বৃষ্টির জল জমে যাওয়ায় সেই সব আলু হিমঘরে রাখাও যাবে না। বৃষ্টি কমে গিয়েছে। আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়বে। তখন আনাজ চাষের আরও ক্ষতি হবে। ধাক্কা খাবে আমের ফলনও।

বৃষ্টির ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জলদি জাতের আলুতে নানা রোগ দেখা দিয়েছে। আলুতে পচন দেখা দেওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর কৃষি দফতর সূত্রের খবর, জেলার ৯০ শতাংশ আলু এখনও মাঠে রয়েছে। ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টির জেরে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ও রেয়াপাড়া ব্লকে আলুর সব থেকে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষি আধিকারিকেরা। হুগলি জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলু চাষ হয়েছে ৮৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। তার প্রায় ৯০ শতাংশেরই ক্ষতি হয়েছে। হাওড়া জেলার ৭০০ হেক্টরের অর্ধেক আলু এখনও জমিতে পড়ে আছে। একই ছবি বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলাতেও।

Advertisement

ঢেড়স, ঝিঙে, বেগুনের মতো গ্রীষ্মকালীন আনাজও পচে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর। নষ্ট হয়েছে বাদাম, পান ও বিভিন্ন জাতের ফুল। মুর্শিদাবাদে আম ও লিচুর মুকুল থেকে শুরু করে মসুর, ছোলা, পেঁয়াজ চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা উদ্যান দফতর ও কৃষি দফতরের কর্তারা বলছেন, ঝোড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে অনেক এলাকায় আম-লিচুর মুকুল ঝরে গিয়েছে। স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় কোথাও কোথাও ছত্রাকের আক্রমণে আমের মুকুল কালো হয়ে যাচ্ছে। নদিয়ায় হোগলবেড়িয়া এলাকার বহু জমিতে নষ্ট হয়েছে কলা চাষ।

রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এত দ্রুত ক্ষয়ক্ষতি বোঝা সম্ভব নয়। জল নামলে তবেই তা বোঝা যাবে। ধানের তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। তবে দুর্যোগের কারণে ক্ষয়ক্ষতি বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন