নন্দীগ্রাম থানাকে উন্নীত করার প্রস্তাব পাশ হল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে। গ্রাফিক্স - সনৎ সিংহ।
ফের শাসকের নজরে নন্দীগ্রাম। এ বার নন্দীগ্রাম থানাকে উন্নীত করার প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল মন্ত্রিসভার বৈঠকে। সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বসেছিল এই বৈঠক। সেই বৈঠকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে নন্দীগ্রাম থানাকে ‘সেমি আরবান’ মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব পাশ হয়। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বয়ং এই প্রস্তাব পেশ করলে তা সমর্থন করেছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। তবে কেন আচমকা নন্দীগ্রামের মতো গ্রামীণ একটি এলাকাকে ‘সেমি আরবান’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, সে বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সাল থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে নন্দীগ্রাম পৃথক গুরুত্ব বহন করে। বাম জমানার পর মমতার জমানাতেও সেই গুরুত্ব বহাল রেখেছে নন্দীগ্রাম। বর্তমানে সেই কেন্দ্রের বিধায়ক বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। যিনি আবার রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতাও বটে। তাই রাজ্য সরকারের নন্দীগ্রাম থানাকে উন্নীত করার এই উদ্যোগকে রাজ্য রাজনীতির কারবারিরা গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ করছেন। কারণ, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে লড়াই হয়েছিল মমতা বনাম শুভেন্দুর। আবার সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটেও নিজের দাপট বজায় রেখেছেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রাম-১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে গেরুয়া পতাকা ওড়াতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। তা ছাড়া দু’টি ব্লক মিলে মোট ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১১টিই দখল করেছে বিজেপি। যদিও, জেলা পরিষদের পাঁচটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই পরাজিত হয়েছে শুভেন্দুর দল। তাই লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রভাব কমাতেই মুখ্যমন্ত্রী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছে রাজ্য বিজেপির একাংশ।
নবান্ন সূত্রে খবর, নন্দীগ্রাম থানাকে ‘সেমি আরবান’ করার মাধ্যমে সেই থানার পরিকাঠামোকে সাজিয়ে তোলা হবে। থানার জন্য আবাসন নির্মাণের পাশাপাশি বেশি সংখ্যায় বাহিনীও মোতায়েন করা হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে অবশ্যই এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি বলেই খবর। নন্দীগ্রাম-১ নম্বর ব্লকের জানকীনাথ মন্দিরের কাছেই রয়েছে নন্দীগ্রাম থানা। বিজেপির শক্ত ঘাঁটি নন্দীগ্রাম-২। কিন্তু নন্দীগ্রাম থানা এলাকাটিতেও ভালই দাপট রয়েছে বিজেপির। মাঝে মধ্যেই এই নন্দীগ্রাম বিধানসভা এলাকাতেই তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ও পরে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। নবান্নের একটি সূত্রের দাবি, নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক উত্তাপ কমাতেই নন্দীগ্রাম থানাকে ‘সেমি আরবান’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। তবে রাজ্য মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক বলেই মনে করছে বিরোধী দলনেতার দফতর।