উত্তরাখণ্ডের পর্যটনমন্ত্রী দীনেশ ধানাই। — নিজস্ব চিত্র।
এক বছর আগের ভয়াবহ ধ্বংসের স্মৃতি থেকে বেরিয়ে কেদারনাথকে নিরাপদ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে উত্তরাখণ্ড সরকার। শুক্রবার কলকাতায় এসে পর্যটকদের কেদারনাথে আমন্ত্রণও জানিয়ে গেলেন সে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী দীনেশ ধানাই।
যতটা সহজে বলে গেলেন মন্ত্রী, ততটা যে সহজ হয়নি পথ, তা স্বীকার করে নিয়েছেন সম্প্রতি কেদার ঘুরে আসা পর্যটকেরা। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, হাঁটা পথের একটা বড় অংশই এখনও সর্ম্পূণ তৈরি করা যায়নি। মন্ত্রীর দাবি, কেদার পৌঁছতে পথ বিশেষ বাড়েনি আগের ১৪ কিলোমিটারের জায়গায় এখন ১৫ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হচ্ছে। তবে স্থানীয় সূত্রের মতে, নতুন পথের দৈর্ঘ অন্তত ২১ কিলোমিটার। গৌরীকুণ্ডের বদলে হাঁটা শুরু হচ্ছে তার বহু আগে সোনপ্রয়াগ থেকে। রামওয়াড়া পর্যন্ত পুরনো পথে গিয়ে লিংগের কাছে সেতু ধরে মন্দাকিনী পেরিয়ে কেদার পর্যন্ত তৈরি হয়েছে নতুন পথ। পর্যটকেরা জানাচ্ছেন, নতুন এই পথ যেমন চড়াই তেমনই দুর্গম। এ বার অধিকাংশ যাত্রীই তাই ফাটা থেকে হেলিকপ্টারে কেদার দর্শন করেছেন।
তবে চার ধাম যাত্রার জন্য একগুচ্ছ বন্দোবস্ত করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। মন্ত্রী জানান, এ বছর থেকে চারধামে যাওয়া সমস্ত যাত্রীদের বায়োমেট্রিক কার্ড দেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের সব তথ্য থাকবে রাজ্য সরকারের কাছে। এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গী সেখানকার পর্যটন উন্নয়ন নিগমের সদস্য সন্দীপ সাহানি জানিয়েছেন, যাঁরা নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়ে নাম নথিভুক্ত করবেন, তাঁদের সেখানকার আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য পাঠানো হবে এসএমএসে। তবে যাত্রীরা বলছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে হাঁটা পথের দুর্গম অংশের কাজ শেষ করা যায়নি বটে, তবে এক বছরে গঢ়বালের অন্যত্র প্রায় সর্বত্র রাস্তাঘাটের ভোল পাল্টে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বছর এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ২৩ হাজার যাত্রী বায়োমেট্রিক কার্ডের জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। অন্যান্য বছর অবশ্য এর তিন-চার গুণ পর্যটক যান। মন্ত্রী জানান, “যাত্রী নিরাপত্তায় বিশেষ টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে। বিপদসঙ্কুল রাস্তায় পযর্টকদের সাহায্য করার জন্য সেই বাহিনীর সদস্যরা থাকছেন।” আরও বেশি হেলিপ্যাডও বানানো হয়েছে। কেদারে থাকার জন্য এখন কোনও হোটেল বা লজ নেই। তবে রাজ্য সরকারের তরফে ৫০০ জনের থাকার জন্য তাঁবুর ব্যবস্থা হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে স্লিপিং ব্যাগও। তবে বেশির ভাগ তাঁবুই খালি থাকছে।
চোরাবারি তাল ফেটে নেমে আসা হড়পা বানে কেদারনাথের অধিকাংশ দোকান ও হোটেল ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। ব্যবসায়ীরা যাতে নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সে দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে রাজ্য। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যই প্রথম দু’বছর সেই ঋণের সুদ দিয়ে দেবে।