কণ্ঠ স্তব্ধ গুরুদাসের, শোক মোদী-মমতারও

বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের দাপুটে নেতা হিসেবে গুরুদাসবাবুর রাজনৈতিক জীবন শুরু। কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র ও যুব, দুই সংগঠনেরই রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার পরে তাঁর কাজের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায় শ্রমিক ফ্রন্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

প্রয়াত সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত। —ফাইল চিত্র

প্রয়াত হলেন প্রাক্তন সাংসদ ও বাম শ্রমিক আন্দোলনের দীর্ঘ দিনের নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত (৮৩)। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। ক্যান্সার ধরা পড়ায় সেই রোগের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল মাসদুয়েক আগে। রাজারহাটের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বুধবারই ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। চিকিৎসায় তেমন সাড়া মিলছিল না, নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রবীণ সিপিআই নেতা। চেতলার বাড়িতেই বৃহস্পতিবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা এবং অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা রাতেই কলকাতায় পৌঁছেছেন। প্রয়াত নেতার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে আজ, শুক্রবার।

Advertisement

বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের দাপুটে নেতা হিসেবে গুরুদাসবাবুর রাজনৈতিক জীবন শুরু। কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র ও যুব, দুই সংগঠনেরই রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার পরে তাঁর কাজের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায় শ্রমিক ফ্রন্ট। টানা অনেক বছর সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, যে দিন গুরুদাসবাবুর মৃত্যুর দিনই মুম্বইয়ে পালিত হচ্ছে এআইটিইউসি-র শতবর্ষ পূর্তি। রাজ্যসভায় তিন এবং লোকসভায় দু’বার সাংসদ থাকার সময়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বাগ্মী নেতা হিসেবে। বাইলাডিলা খনি বিক্রির উদ্যোগ আইনি লড়াইয়ে গিয়ে রুখে দেওয়া, হর্ষদ মেটা কেলেঙ্কারি এবং পরে টু-জি স্পেকট্রাম-কাণ্ডের তদন্ত বা মারুতি কারখানার আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। বড় বড় সংস্থা কী ভাবে আয়করে ফাঁকি দিচ্ছে, তার হদিশ দিয়ে পুরস্কার পাওয়া তৎকালীন সাড়ে সাত লক্ষ টাকা দিয়ে দিয়েছিলেন জঙ্গিহানায় নিহতদের পরিবারের শিশুকল্যাণে। তাঁর সার্বিক ভূমিকা স্মরণ করেই সিপিএম শোকবার্তায় বলেছে, ‘দেশের বামপন্থী আন্দোলন ও শ্রমিক শ্রেণি এক বলিষ্ঠ কণ্ঠকে হারাল’।

শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে বলেছেন, ‘গুরুদাসবাবু তাঁর নিজের আদর্শের পক্ষে স্পষ্ট ভাবে সওয়াল করতে পারতেন। সংসদে তাঁর কণ্ঠ রাজনীতির সব বলয়ই মন দিয়ে শুনত’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘সংসদ ও শ্রমিক আন্দোলনের মাধ্যমে জাতির প্রতি তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে’। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে দুই তৃণমূল সাংসদ সুব্রত বক্সী ও দোলা সেন এ দিন গুরুদাসবাবুর বাড়ি গিয়েছিলেন। ছিলেন সম্পর্কে গুরুদাসবাবুর ভাগ্নি, তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও। পার্ক সার্কাসের ‘পিস ওয়ার্ল্ড’-এ গিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিজেপির দুই নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন