বঙ্গের শিক্ষাঙ্গনে প্রচার চালাবে ভিএইচপি

এ বার প্রেম ও বিয়ের উপর নজরদারি চালু করতে চায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে তারা রাজ্যের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, টিউটোরিয়াল হোম এবং কম্পিউটার সেন্টারগুলিতে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের কাছে গিয়ে ‘হিন্দু’ ধর্ম রক্ষায় ‘লাভ জেহাদ’-এর বিরুদ্ধে প্রচার করবে।

Advertisement

রোশনী মুখোপাধ্যায় ও স্যমন্তক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৯
Share:

এ বার প্রেম ও বিয়ের উপর নজরদারি চালু করতে চায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে তারা রাজ্যের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, টিউটোরিয়াল হোম এবং কম্পিউটার সেন্টারগুলিতে পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের কাছে গিয়ে ‘হিন্দু’ ধর্ম রক্ষায় ‘লাভ জেহাদ’-এর বিরুদ্ধে প্রচার করবে। তাদের এই কর্মসূচিকে সমর্থন করছে বিজেপি। তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস সকলেই এর বিরুদ্ধে নিন্দায় সরব। পাশাপাশি, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে ‘উগ্র সাম্প্রদায়িক’ প্রবণতা তৈরি করার পিছনে লোকসভা ভোটে মেরুকরণের অঙ্ক দেখছে ওই তিন বিরোধী।

Advertisement

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্ব ক্ষেত্রের সংগঠন সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহ শনিবার বলেন, ‘‘হিন্দু সমাজের জনসংখ্যা কমাতে লাভ জেহাদকে একটা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই হিন্দু সমাজকে বাঁচাতে আমরা লাভ জেহাদ বিরোধী প্রচার কর্মসূচি নিচ্ছি।’’ তাঁদের পাল্টা কর্মসূচি হবে, ‘বেটি বচাও, বধূ লাও’। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই কর্মসূচিতে আপত্তির কিছু দেখছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘হিন্দু সমাজকে রক্ষার দায়িত্ব তো আমাদের নিতেই হবে।’’

তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘প্রেম-ভালবাসা মানুষের স্বাভাবিক বৃত্তি। তার বিরুদ্ধে বাংলায় কিছু করতে গেলে মানুষের হাতেই মার খেতে হবে।’’ যাঁদের মাথায় এই সব চিন্তা ঘোরে, তাঁদের ‘অশিক্ষিত, বর্বর, অসামাজিক’ বলেও মনে করেন ফিরহাদ। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এবং সঙ্ঘ মানুষের মধ্যে যে মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণা জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছে, তা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সফল হতে দেবে না।’’ যদিও রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্তের জন্য তৃণমূল জমানাকেই দায়ী করেছেন তিনি। আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রেম মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার। তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা সংবিধান বিরোধী। বিজেপি-সঙ্ঘ এ সব করলে বাংলার সংস্কৃতি তার মোকাবিলা করবে।’’

Advertisement

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই কর্মসূচিতে সহমত নন বিজেপি নেত্রী তনভীর নাসরিনও। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তনভীর বলেন, ‘‘ভিন্ন ধর্মে প্রেম ও বিয়ের বিরোধিতা ভারতের আইন এবং সংবিধান সমর্থন করে না। আর ভিন্ন ধর্মে বিয়ে করতে হলে ধর্মান্তরিত হওয়াও বাধ্যতামূলক নয়।’’ অভিনেত্রী নুসরত জাহানের বক্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে এই সংস্কৃতি কোনও দিন ছিল না। এখানকার মানুষ এ সব বরদাস্ত করবে না।’’ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় অবশ্য মনে করেন, কোনও বিষয়ে কারও নিজস্ব মতামত বা বিশ্বাস থাকতেই পারে। তবে প্রেম-ভালবাসা আবেগজাত। তা নিয়ম দিয়ে বাঁধা কঠিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন