নির্দেশ পরিবেশ আদালতের

বিশ্বভারতী এলাকায় পৌষমেলা তিন দিন

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌষমেলা শেষ করতে হবে তিন দিনে। মেলা গুটিয়ে নেওয়ার জন্য মিলবে আর একটি দিন। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৪৫
Share:

‘ভাঙা মেলায়’ এই আবর্জনা জমা নিয়েই আপত্তি। —ফাইল চিত্র

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌষমেলা শেষ করতে হবে তিন দিনে। মেলা গুটিয়ে নেওয়ার জন্য মিলবে আর একটি দিন। মঙ্গলবার এমনই নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

Advertisement

পৌষমেলায় দূষণের অভিযোগ তুলে মামলা করেছিলেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। এ দিন সেই মামলাতেই এই নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি এস পি ওয়াংডি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই সঙ্গে বহুজাতিক বাণিজ্যিক সংস্থার বদলে গ্রামীণ কুটির বা হস্তশিল্পীদের সুযোগ বাড়িয়ে মেলার ‘আদি চরিত্র’ ফিরিয়ে আনায় জোর দিতে বলেছে পরিবেশ আদালত। বোলপুর-শান্তিনিকেতনে ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট’-এর (কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ) কী ব্যবস্থা রয়েছে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের হলফনামাও তলব করেছে।

সুভাষবাবু বলেন, “দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী, পৌষমেলা তিন দিনের। তার পরেও দশ-বারো দিন ধরে ভাঙা মেলা চলত। বিশ্বভারতীর চত্বরে সেই ‘ভাঙা মেলা’ই নিষিদ্ধ করল আদালত।’’ তিনি জানান, জেলাশাসককে পর্যবেক্ষক করে এই মেলা আয়োজন করার কথা বলেছে আদালত। চার দিনের মধ্যে যাতে মেলা গুটিয়ে যায়, তা পুলিশ সুপারকে নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেলা শেষে এলাকাকে জঞ্জালমুক্ত করার দায়িত্ব নিতে হবে বোলপুর পুরসভাকে। চার দিন পরে বিশ্বভারতী এলাকার বাইরে অন্যত্র মেলা বসানোয় আপত্তি নেই আদালতের। সে ক্ষেত্রে পরিবেশ বিধি মেনে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের নজরদারিতে মেলা বসাতে হবে।

Advertisement

পৌষমেলাকে কেন্দ্র করে ফি ডিসেম্বরে বিশ্বভারতী চত্বরে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। সেই সময়ে পরিবেশ বিধির তোয়াক্কা না করে প্লাস্টিক জড়ো করা হয়, ডি়জেল জেনারেটর চালানো হয় এবং মেলা শেষে কঠিন বর্জ্য ঠিক ভাবে নষ্ট করা হয় না বলে অভিযোগ। মামলায় হলফনামা দিয়ে বিশ্বভারতী জানিয়েছিল, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের দায়িত্বে ৭-৯ পৌষ, এই তিন দিন সরকারি ভাবে মেলা হওয়ার কথা। কিন্তু তার পরে আরও ১০-১২ দিন ধরে ‘ভাঙা মেলা’ চলে। অথচ, সেই মেলার সঙ্গে বিশ্বভারতী বা শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট জড়িত থাকে না।

আদালতের এ দিনের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর আশ্রমিকেরা। প্রবীণ আশ্রমিকদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, ‘‘পৌষমেলা শুরু হয়েছিল গ্রামীণ শিল্পের বিকিকিনি বাড়ানোর লক্ষ্যে। সেই অবস্থান থেকে এখন অনেকটাই সরে গিয়েছে এই মেলা। এই নির্দেশে পৌষমেলার সেই আদি চরিত্র ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হল।’’ পক্ষান্তরে, ওই নির্দেশে উদ্বিগ্ন বণিক মহল। ‘বোলপুর-শান্তিনিকেতন হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষে প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ‘বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক সুনীল সিংহের আশঙ্কা, মেলার দিন কমলে ব্যবসা মার খাবে।

আদালতের নির্দেশ মানবেন বলে জানিয়েছেন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের পক্ষে সবুজকলি সেন। নির্দেশ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী এবং পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন