WBJEE Results 2020

গবেষণাতেই মন জয়েন্টে প্রথমের

ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চান রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রাসে দ্বিতীয় পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের শুভম ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০৪:৪৭
Share:

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন না বলে জানিয়েছেন রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী সৌরদীপ দাস।

রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় প্রথম। তবে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন না বলেই জানিয়েছেন রায়গঞ্জের সৌরদীপ দাস। তার বদলে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেস (আইআইএসসি)-এ অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যা নিয়ে উচ্চশিক্ষা শেষে গবেষণা করতে চান তিনি। একই ভাবে প্রথম পছন্দ হিসেবে আইআইএসসি-তে ভর্তি হতে চান তৃতীয় স্থানাধিকারী ডিপিএস রুবি পার্কের শ্রীমন্তী দে-ও। তবে আইআইটি-তে ভর্তি হওয়ার চেষ্টাও চালাচ্ছেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে বলে জানিয়েছেন দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দুর্গাপুরের শুভম ঘোষ। তবে তাঁরও ইচ্ছে আইআইটিতে উচ্চশিক্ষার পাঠ নেওয়া। অর্থাৎ, মেধা তালিকার প্রথম তিন জনেই উচ্চশিক্ষায় কার্যত রাজ্যের বাইরে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে যেতে চাইছেন।

Advertisement

সৌরদীপ বলেছেন, ‘‘এক বছর আগে আমি কিশোর বৈজ্ঞানিক প্রোৎসাহন যোজনা (‌কেভিপিওয়াই) পরীক্ষায় দেশের মধ্যে ৪৮তম ও তফসিলি জাতিভুক্ত পড়ুয়াদের মধ্যে দেশে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আইআইএসসি-তে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। দেশের মধ্যে বিজ্ঞান গবেষণার সব থেকে বড় প্রতিষ্ঠান আইআইএসসি। সেখানেই গবেষণা করতে চাই।” তবে সৌরদীপের বাবা, উত্তর দিনাজপুরের সহ-কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) শঙ্কর দাস বলছেন, “করোনা-আবহে চলতি বছরে আইআইএসসি-র ভর্তি প্রক্রিয়া পিছিয়ে গিয়েছে। কবে চালু হবে, সেই চিন্তায় আছি।” এ বছর ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের রামকৃ্ষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ থেকে সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ৯৭.৮ শতাংশ পেয়ে পাস করেছেন সৌরদীপ। কিন্তু জয়েন্টে প্রথম হবে তা ভাবেননি। অশোকপল্লির বাড়িতে বাবা ছাড়াও, সৌরদীপের মা ফুলটুসি এবং তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ভাই শঙ্খদীপ রয়েছে।

ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চান রাজ্যে জয়েন্ট এন্ট্রাসে দ্বিতীয় পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের শুভম ঘোষ। ডিএসপি টাউনশিপের বাসিন্দা শুভমের বাবা বিশ্বনাথবাবু উত্তরাখণ্ডে সেনাবাহিনীর একটি স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। মা কল্যাণীদেবী দুর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালের নার্স। দ্বাদশ শ্রেণিতে বোর্ডের পরীক্ষায় ৯৯.০৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া শুভম এ দিন বলেন, ‘‘আমার পছন্দ ক্রিকেট, পছন্দের ক্রিকেটার অবশ্যই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ঘড়ি ধরে পড়ার বদলে যখন ইচ্ছা হত, পড়তাম। এখন জেইই অ্যাডভান্সডের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাজ্য বা বাইরের কোথাও সুযোগ পেলেই পড়তে যাব।’’ দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি বেসরকারি প্রতিযোগিতামূলক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিতেন শুভম। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের প্রথাগত পড়াশোনার পাশাপাশি, জয়েন্টের মতো পরীক্ষায় বসতে গেলে আলাদা ভাবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনার গুরুত্ব রয়েছে।’’

Advertisement

রাজ্য জয়েন্টের মেধা তালিকা

• প্রথম: সৌরদীপ দাস। দেওঘরের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ।
• দ্বিতীয়: শুভম ঘোষ। দুর্গাপুর ডিএভি মডেল স্কুল।
• তৃতীয়: শ্রীমন্তী দে।
দিল্লি পাবলিক স্কুল, রুবি পার্ক।
• চতুর্থ: উৎসব বসু।
সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুল।
• পঞ্চম: পূর্ণেন্দু সেন। দুর্গাপুর ডিএভি মডেল স্কুল।
• ষষ্ঠ: অঙ্কুর ভৌমিক।
দিল্লি পাবলিক স্কুল, রুবি পার্ক।
• সপ্তম: সোহম সমাদ্দার। গার্ডেন হাইস্কুল।
• অষ্টম: অরিত্র মিত্র।
বেহালা আর্য বিদ্যামন্দির।
• নবম: গিরিক মাসকারা। সল্টলেকের সেন্ট জোনস স্কুল।
• দশম: অর্ক দত্ত। লালবাহাদুর শাস্ত্রী সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুল, রাজস্থান

ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা শ্রীমন্তী আবার বলছেন, সারা বছর নিয়ম করে পড়াই তাঁর সাফল্যের মন্ত্র। ভাল ফল হবে জানলেও একেবারে তৃতীয় হবেন— এমন আশা করেননি তিনি। বললেন, ‘‘আমার দিদা ফোন করে বলেন, ‘তুই থার্ড হয়েছিস। টিভিতে বলল’। প্রথমে বিশ্বাসই করিনি!’’ তবে তাঁদের আবাসনে কোভিড রোগী থাকায় এই সাফল্যের পরেও ফোনালাপেই অভিনন্দনের পালা চলেছে বলে জানালেন বাবা সুধাংশু কুমার, মা সুস্মিতা। সিবিএসই তে ৯৮.২ শতাংশ নম্বর পাওয়া শ্রীমন্তী জানান, তিনি এখন জয়েন্ট অ্যাডভান্সড-এর জন্য তৈরি হচ্ছেন। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেস-এ পড়ার ইচ্ছেও আছে। আর কলকাতায় পড়লে তাঁর পছন্দ যাদবপুরে কম্পিউটার সায়েন্স।

আরও পড়ুন: জয়েন্ট কৃতীর কাউন্সেলিং বিনা ফি-তে

আরও পড়ুন: আজ রাজ্য জুড়ে পূর্ণ লকডাউন, পথে অতিরিক্ত পুলিশ

জেইই অ্যাডভান্সড-এর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিশেষ ভাবে সক্ষমদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রথম (রাজ্যে ২৬৫) দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুলের পড়ুয়া অবিনাশ প্রসাদও। ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান আইআইটি-তে। ফরিদপুরে (লাউদোহা) ঝাঁঝরায় ইসিএলের আবাসনে থাকেন অবিনাশ। উচ্চ মাধ্যমিকে পেয়েছেন ৯৫ শতাংশ। অবিনাশের বাবা, পেশায় ইসিএল কর্মী সহদেব প্রসাদ জানান, ডান হাতে প্রতিবন্ধকতা থাকায় অবিনাশ বাঁ হাতে লেখেন। তাঁর দাদা যাদবপুরে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করছেন। ভাই সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। মা জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, ‘‘ছেলের সাফল্যে আমরা গর্বিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন