প্রতীকী ছবি।
যেমন করে হোক বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ক্ষতির বহর কমিয়ে আয় বাড়াতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কোন পথে?
বিশেষত পাঁচটি জেলায় এখনই কিছু ব্যবস্থা না-নিলেই নয়। কেননা হুকিং-সহ নানা কারণে সরকারি খাতায় ক্ষতির তালিকার শীর্ষে নাম উঠে এসেছে ওই পাঁচ জেলা— মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার। লোকসান-রোগের ‘কড়া’ দাওয়াই খুঁজতে ওই জেলাগুলির পুলিশ-প্রশাসন ও জেলাশাসকদের সহযোগিতা চেয়ে বৈঠক ডাকল বিদ্যুৎ দফতর। বিদ্যুৎ সূত্রের খবর, সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে শীঘ্রই বৈঠকে বসছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
মন্ত্রী জানান, জেলাশাসকদের বৈঠকে আসার জন্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে। থাকবেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। ওই সব জেলায় বিদ্যুৎ পরিষেবা দিয়েও যে-ভাবে রাজস্ব-ক্ষতি হচ্ছে, তা কমাতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ তেমনই। সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা ছাড়া তা কমানো অসম্ভব বলেই সম্মিলিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সরকারি বিদ্যুৎ শিল্পের আর্থিক স্বাস্থ্য যে খারাপের দিকে যাচ্ছে, সেই খবর মাঝেমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছচ্ছিল। বিদ্যুৎকর্তারা জুনের শেষ দিকে নবান্নে এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, বিদ্যুৎ পরিষেবা দিয়েও গড়ে ২৮ শতাংশের মতো লোকসান হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, যেমন করে হোক, ক্ষতির বহর ১১ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। বৈঠকে নির্দিষ্ট পাঁচটির বাইরে আরও কিছু জেলাকে ডাকার পরিকল্পনা রয়েছে দফতরের।
ক্ষতি-তালিকার শীর্ষে থাকা জেলাগুলিতে লোকসান কেমন?
এক বিদ্যুৎকর্তা জানান, ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষে শুধু মুর্শিদাবাদেই বণ্টন সংস্থার রাজস্ব ক্ষতি (এটিসি লস) হয়েছে প্রায় ৩১২ কোটি টাকার। এ ছাড়াও অন্তত ৮৪ কোটি টাকার বিল বকেয়া রয়েছে। তার মধ্যে ৬৭ কোটির কিছু বেশি টাকার বিল মেটাননি সাধারণ গ্রাহকেরাই। শুধু মুর্শিদাবাদেই বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে গিয়ে গড়ে রাজস্ব-ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৫৪ শতাংশ। ১০০ টাকার বিদ্যুৎ বেচে আদায় হচ্ছে মাত্র ৪৬ টাকা! অন্য চারটি জেলাতেও ক্ষতির হার একই রকম বলে ওই কর্তার দাবি।
কোথায় কী ভাবে এবং কেন ক্ষতি হচ্ছে, তা বিশদ ভাবে জানিয়ে বণ্টন সংস্থার তরফেও জেলাশাসকদের চিঠি পাঠানো হচ্ছে। সম্ভব হলে ১৫ দিনের মধ্যে একটি করে অ্যাকশন প্ল্যান বা কার্যকর পরিকল্পনা জানানোর কথাও বলা হয়েছে জেলাশাসকদের।