শেষ বেলায় পৌঁছেছে লোকসভা ভোটের পালা। ভোটের পারদ তাই তুঙ্গে। তবে লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফায় হাওয়া অফিসের থার্মোমিটারের পারদ তেমন চড়বে না। বরং রবিবার ভোট-সপ্তমীর সন্ধ্যায় স্বস্তির আশা আছে বলেই জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘শেষ দফার ভোটে কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় দিনের তাপমাত্রা ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকতে পারে। দিনে গরম মালুম হলেও তাপপ্রবাহের কোনও আশঙ্কা নেই। সন্ধ্যায় দুই ২৪ পরগনা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে।’’
ভোট মানেই তীব্র গরম। তা সে রাজনৈতিক উত্তাপ হোক বা গ্রীষ্মের তীব্র দহন। এ বারেও মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পুরুলিয়ার ভোটে তীব্র গরম ছিল। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় ভোটের আগে তিন দিন কার্যত তাপপ্রবাহ বয়েছিল। কলকাতা ও লাগোয়া দুই ২৪ পরগনার ভোটে তেমন আশঙ্কা নেই বলে কিছুটা স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন অনেকেই। এক আবহবিজ্ঞানীর সরস মন্তব্য, ‘‘এ বার ভোটের গরম এত বেশি বলেই বুঝি হাওয়ার গরম কম!’’
হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, কলকাতা এবং লাগোয়া জেলার ভোট মানেই তীব্র দহন। ২০১৪ সালে ১২ মে কলকাতা এবং লাগোয়া জেলার ভোট ছিল। সে-দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা স্বাভাবিকের থেকে ছয় ডিগ্রি বেশি। তাপপ্রবাহ বয়েছিল সে-দিন। তার আট দিন পরে, ২০ মে শহরের তাপমাত্রা উঠেছিল ৪১.৫ ডিগ্রিতে। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন ৯ মে ৪২.১ ডিগ্রিতে ওঠে কলকাতার তাপমাত্রা। সেটাই গত এক দশকের সর্বোচ্চ। আবার হাওয়ার খামখেয়ালে ওই বছরের ১৩ মে কলকাতার তাপমাত্রা ৩৪.২ ডিগ্রিতে অর্থাৎ স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি নীচে নেমে গিয়েছিল। হাওয়া অফিসের তথ্যই বলছে, ১৯৪৫ সালের ২৮ মে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছিল। এবং সেটাই এ-যাবৎ কালের রেকর্ড!
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর হানার পরে বঙ্গোপসাগরের উচ্চচাপ বলয় উধাও হয়ে গিয়েছিল। তার ফলে বিহার-ঝাড়খণ্ডের গরম হাওয়া বাংলার পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ঢুকে তাপপ্রবাহে ইন্ধন জুগিয়েছিল। ২০১৪ সালে একই কারণে তাপপ্রবাহ চলেছিল গাঙ্গেয় বঙ্গে। কিন্তু ফণীর প্রভাব কেটে যাওয়ার পরে এ বার সাগরে আবার উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়েছে। ফলে জলীয় বাষ্প ঢুকতে শুরু করেছে। সেই জোলো হাওয়ায় ঘেমো গরম মালুম হচ্ছে। তবে সন্ধ্যার দিকে বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টিও হচ্ছে কমবেশি।