এ যেন ‘মেঘ-বিমানের’ আচমকা গোলাবর্ষণ!
কেষ্টপুরে বাসে বসে মেঘলা আকাশ দেখতে মন্দ লাগছিল না কোচিং সেন্টারে পড়তে যাওয়া এক তরুণীর। উল্টোডাঙা পৌঁছতেই আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামল! মুষলধারে বৃষ্টিতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিজে সপসপে হয়ে গেলেন তিনি।
আকাশ ভাঙা বৃষ্টিতে নাকাল অফিসফেরত প্রৌঢ়ও। ধর্মতলায় দৌড়ে বাস ধরার আগেই ‘জলকামানে’ নাস্তানাবুদ তিনি।
ভরা ভাদ্রের বিকেলে এ ভাবেই খেল দেখাল প্রকৃতি। শরৎকালে এমনিতেই প্রকৃতি খামখেয়ালি থাকে। আচমকা বৃষ্টির হানাটাই তার চরিত্র। কিন্তু এ দিনের আকাশভাঙা বৃষ্টির মদত জুগিয়েছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বিস্তৃত মৌসুমি অক্ষরেখা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আজ, শনিবারও কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, উত্তর বিহার থেকে গাঙ্গেয় বঙ্গের উপর দিয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত অক্ষরেখাটি বিস্তৃত রয়েছে। তার ফলেই সাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে বৃষ্টি হয়েছে। রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, এ দিন কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলিতে একাধিক বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তার ফলেই এমন বৃষ্টি। যেখানে মেঘপুঞ্জ যত বড় ছিল, সেখানেই বৃষ্টি হয়েছে বেশি।
আবহবিদদের একাংশ মনে করেন, মৌসুমি অক্ষরেখা সরে গেলেও বৃষ্টি পুরোপুরি বিদায় নেবে না। তার কারণ এ সময়ে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকে। বাতাসে থাকে বাড়তি জলীয় বাষ্পও। ফলে এই ঋতুতে বিভিন্ন সময়ে আঞ্চলিক ভাবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়। প্রকৃতি খামখেয়ালি আচরণও করে। এক আবহবিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘এ সময়ে প্রকৃতির তুঘলকি মেজাজটাই দস্তুর। কারণ, রোদ এবং জলীয় বাষ্পের যুগলবন্দিতে স্থানীয় ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়।’’