Bihar Election Result 2020

প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ভোট নিয়ে সংশয়ে বঙ্গ বিজেপি

প্রকাশ্যে অবশ্য বিজেপি নেতৃত্ব এই শঙ্কা ব্যক্ত করছেন না। বরং রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর ব্যাখ্যা, বিহারের ভোটের ফলেও কিছু মানুষের প্রতিষ্ঠান বিরোধী মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে।

Advertisement

রোশনী মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৬
Share:

প্রতীকী চিত্র।

বিহার জয়ের পরে পশ্চিমবঙ্গের ভোট নিয়ে দৃশ্যত উজ্জীবিত বিজেপি। বুধবার দিনভর টুইটারে ‘এ বার বাংলা পারলে সামলা’ হ্যাশট্যাগে একের পর এক পোস্ট দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতা এবং সাংসদরা। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও এ দিন কোচবিহারে জনসভায় তৃণমূলের উদ্দেশে ওই ভাষাতেই চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন।

Advertisement

দিলীপবাবুর সভায় ভিড়ও হয়েছিল ভাল। কিন্তু এ সবের সমান্তরালে আরও একটি ভাবনা রাজ্য বিজেপির মধ্যে কাজ করছে। তা হল— প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোটের অঙ্কে কত দূর নির্ভর করা যায়? কারণ বিহারের মানুষের প্রতিষ্ঠান বিরোধী মনোভাবের কথা সেখানে ভোটের প্রচার-পর্ব জুড়ে উঠে এসেছিল। চর্চা হচ্ছিল— বিহারের আমজনতার একটা বড় অংশ নীতীশ-প্রশাসনের উপর ক্ষুব্ধ। সেই জন্যই সেখানে ভোটের ফল নিয়ে আশাবাদী ছিল বিরোধী মহাজোট। বাস্তবে অবশ্য অঙ্ক মেলেনি। শেষ পর্যন্ত নীতীশ কুমারের সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছেন বিহারের মানুষ। এই প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন ঘুরছে— দলীয় নেতৃত্ব যতই প্রচার করুন এ রাজ্যে মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাজে ক্ষুব্ধ, আগামী বিধানসভা ভোটে এখানেও যে বিহারের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি হবে না, তার নিশ্চয়তা কী?

প্রকাশ্যে অবশ্য বিজেপি নেতৃত্ব এই শঙ্কা ব্যক্ত করছেন না। বরং রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর ব্যাখ্যা, বিহারের ভোটের ফলেও কিছু মানুষের প্রতিষ্ঠান বিরোধী মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে। সেই কারণেই নীতীশের দল জেডিইউ-র আসন কমেছে। কিন্তু বিজেপি নীতীশের সরকারের শরিক হলেও মানুষের রাগ তাদের উপর পড়েনি।

Advertisement

আরও পডুন: ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বুথের ম্যাপিং শুরু​

কারণ সে ক্ষেত্রে তাদের সামনে ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়ন কর্মসূচি। মানুষ মোদীর উপরে আস্থা রাখায় বিজেপির আসন বেড়েছে। সায়ন্তনের কথায়, ‘‘মোদীজির ম্যাজিকে বিহারে নীতীশ কুমারের সরকার বেঁচেছে। আর মোদীজির ম্যাজিকেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে।’’ আর প্রতাপবাবু বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহার এক নয়। পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধীদের হত্যা করা হয়, মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়। এখানে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। এখানে তোলাবাজি এবং সিন্ডিকেট রাজ চলে। বিহারে এ সব নেই।’’

বস্তুত, বিহার জয়ের পরে রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, দলের আইটি সেলের সর্বভারতীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিত মালব্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, প্রতাপবাবু, সায়ন্তনবাবু প্রমুখ সকলেরই টুইটের নির্যাস— ‘‘বিজেপির জয়ের হাওয়া বিহার হয়ে বাংলার দরজায় এসে পড়েছে। এটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির বঙ্গ বিজয়ের স্বপ্নকে ‘অবিশ্বাস্য রকমের অবাস্তব’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। তৃণমূলের এক নেতার পাল্টা ব্যাখ্যা, ‘‘বিজেপি নেতারা যখন মেনেই নিচ্ছেন, নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে বিহারের মানুষের ক্ষোভ ছিল, তখন তাঁকেই আবার মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসাচ্ছেন কেন? এ তো স্ববিরোধিতা! বরং বিজেপির সৎ ভাবে বলা উচিত, প্রতিষ্ঠন বিরোধিতা বিহারে তো কাজ করেইনি, পশ্চিমবঙ্গেও করবে না। কারণ পশ্চিমবঙ্গে কোনও প্রতিষ্ঠা বিরোধী মনোভাবই মানুষের নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন