Dilip Ghosh

রাজীবদের স্বাগত টুইট অমিত, কৈলাস, মুকুল, শুভেন্দুদের, নীরব শুধু দিলীপ ঘোষ

চার্টার্ড বিমানে চাপিয়ে রাজীবদের দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন স্বয়ং অমিত শাহ। গোটা ঘটনায় রাজ্য নেতৃত্বের কোনও ভূমিকাই ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ১২:৩৪
Share:

বেশ কয়েক ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে দিল্লিতে অমিত শাহের বাড়িতে গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে তৃণমূলের আরও ৪ নেতা। সঙ্গে অভিনেতা রুদ্রনীল। শনিবার রাতেই তাঁদের স্বাগত জানিয়ে টুইট করেন অমিত। তার পর একে একে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায় এবং অধুনা পদ্মশিবিরে নাম লেখানো শুভেন্দুও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের স্বাগত জানান। কিন্তু যে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে এত সমারোহ, সেই বাংলার বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষই এ ব্যাপারে আশ্চর্যজনক ভাবে নীরব। শনিবার রাতে অমিতের টুইটটি রিটুইট করলেও, রাজীবদের স্বাগত জানাতে তিনি নিজে টুইটারে একটি শব্দও খরচ করেননি। অথচ রাজীব মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর, নিজেই প্রকাশ্যে তাঁকে পদ্মশিবিরে স্বাগত জানিয়েছিলেন দিলীপ।

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় চার্টার্ড বিমানে চাপিয়ে রাজীবদের দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন স্বয়ং অমিত শাহ। রাজীবকে সরাসরি ফোন করে দিল্লি চলে আসার কথা বলেন তিনিই। এই যোগদানপর্বের গোটাটাই হয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপি-র তত্ত্বাবধানে। রাজ্য নেতৃত্বের কোনও ভূমিকাই ছিল না। রাজ্য নেতৃত্বকে এ ব্যাপারে কিছু জানানোই হয়নি। নেওয়া হয়নি তাঁদের মতামতও। এর সঙ্গে দিলীপের নিজে কিছু না বলার কোনও সম্পর্ক আছে কি? এ নিয়ে প্রশ্ন করলে আনন্দবাজার ডিজিটালকে ফোনে দিলীপ বলেন, ‘‘আমি টুইটের নেতা নই। স্ট্রিটের নেতা। এই সাতসকালে যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, অনেকের দিনই শুরু হয়নি। প্রতিদিনের মতো আজ সকাল ৬টায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে মর্নিং ওয়াক করেছি। সেখানে দলীয় কর্মসূচির চা চক্রও হয়েছে।’’

ভোটের আগে তৃণমূল থেকে লোক ভাঙিয়ে এনে ‘দলভারী’ করা নিয়ে আগেও অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে। আসানসোলের প্রাক্তন পুর প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা জোরাল হলে প্রকাশ্যে তা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। দিলীপ তাঁর যুক্তিতে সমর্থনও জানিয়েছিলেন। তা হলে কি দলে দলে তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ানোর এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা? তা যদিও মানতে চানিন দিলীপ। বরং আগেও টুইটারে কখনও কাউকে স্বাগত জানাননি বলে দাবি করেন তিনি। দিলীপ বলেন, ‘‘যখন মুকুলদা যোগ দিয়েছিলেন, শুভেন্দুদা যোগ দিয়েছিলেন, তখনও টুইট করে কাউকে স্বাগত জানাইনি। প্রতি দিন অনেক নেতাই দলে যোগ দিচ্ছেন। আরও অনেকে আসবেন। সকলকে আগেই অন্তর থেকে স্বাগত জানিয়েছি। এখনও জানাচ্ছি।’’

Advertisement

তবে দিলীপের এই যুক্তি মনে ধরছে না অনেকেরই। কারণ রাজীব-সহ উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী, রানাঘাট পুরসভার পদত্যাগী প্রশাসক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নিয়ে শনিবার দিনভর যখন সরগরম রাজ্য রাজনীতি, তখন রাজ্যের কোনও নেতাকেই ফ্রন্টফুটে দেখা যায়নি। বরং মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মতো কেন্দ্রীয় নেতারাই বিষয়টি তদারকি করছিলেন। তবে নতুনদের নিয়ে বিজেপির এই দ্বন্দ্ব বেশ কিছু দিন ধরেই চলে আসছে। মুকুল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সেই বিবাদ প্রকাশ্যেও চলে আসে, যা মেটাতে কখনও দু’পক্ষকে দিল্লিতে ডেকে নিয়ে গিয়ে, কখনও আবার রাজ্যে সকলকে একত্রিত করে বোঝাতে হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। রবিবার হাওড়ার ডুমুরজলায় বিজেপির তরফে যোগদান মেলায় পৌরহিত্য করতেও ডেকে আনা হয়েছে স্মৃতি ইরানিকে। যদিও সেখানে থাকছেন দিলীপ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন